ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তরিকুল ইসলামের ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। তবে ভিডিওটিতে নেওয়া টাকা ঘুষের নয়, ধারের টাকা বলে দাবি করেছেন তিনি।
এদিকে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আফজাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে জেলা খাদ্য অফিসের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক শাখাওয়াত হোসেন কাজীকে।
মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে ফেসবুকের একটি আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। তবে ভিডিও কবে রেকর্ড করা হয়েছে তা জানা যায়নি।
ভিডিওতে দেখা যায়, ‘ডিলারের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তরিকুল ইসলাম। এ সময় এক ডিলারকে বলতে শোনা যায়, স্যার যে কয়বার যাওয়া লাগে আপনি যাইয়েন, কোনো লোক পাঠাইয়েন না। আপনি নিজে খারাপ কথা বইলেন, কিন্তু অন্যকে দিয়ে বলিয়েন না। পাশ থেকে আরেকজন বলেন, স্যার যা বলার আপনি বলে দিয়েন। আপনার ডিলাররা কোনো অনিয়ম করে না।’
তবে এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসার ঘটনায় বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পরেছেন বলে দাবি করেছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক তরিকুল ইসলাম।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তরিকুল ইসলামের দাবি, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ডিলার তার কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। সেই টাকা পরিশোধ করার সময় গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করা হয়।
তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ের ভিডিও এটি নয়। অনেক ডিলার টাকা ধার নিয়ে থাকেন, টাকা ফেরত দেওয়ার সময় ভিডিও করেছে। মঙ্গলবার ফেসবুকে পোস্ট করেছে। দীর্ঘদিন ধরে চাপে রয়েছি, মূলত পলিটিক্যাল সমস্যা। কিছুদিন আগে ডিলার বাড়ানো হয়েছে, সেইটা মূল সমস্যা।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকারকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’
জেলা প্রশাসক আরও জানান, ইতিমধ্যেই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ফরিদপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আফজাল হোসেনকে আহ্বায়ক করে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে জেলা খাদ্য অফিসের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক শাখাওয়াত হোসেন কাজীকে।
জেলা প্রশাসক জানান, গঠিত কমিটি প্রকাশিত ভিডিওতে উপস্থাপিত ঘটনার সত্যতা সরেজমিনে তদন্তপূর্ব আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পস্ট মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ফরিদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. ফরহাদ খন্দকারের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ফরিদপুর সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আফজাল হোসেন বলেন, ‘ইতিমধ্যেই তদন্তের কাজ শুরু করা হয়েছে। আমি বর্তমানে ভাঙ্গাতে রয়েছি। তদন্ত চলছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দিতে পারব বলে আশা করছি।’