মে নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে খুনের পর ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের (৫৬) মরদেহ টুকরো টুকরো করা হয়। পরে সেগুলো ফ্রিজে রাখা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ১২ মে ভারতে চিকিৎসা করাতে যান আনোয়ারুল। প্রথমে উঠেছিলেন বরাহনগরে এক বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। দিন দুয়েক সেখানে থাকার পর এক দিন বাড়ি থেকে বের হন আনোয়ারুল। তার পর থেকেই আর খোঁজ মিলছিল না। বুধবার (২২ মে) তিনি হয়েছেন এমন খবর সামনে আসে।
গত ১৩ মে নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনের একটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে খুন করা হয় আনারকে। প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এর পর সেই বডি টুকরো টুকরো করে ফ্রিজে রাখা হয়। তিন দিন ধরে সেই বডি পার্ট সারানো হয়। ১৪, ১৫ ও ১৮ মে বডি পার্টি সরানো হয়। তবে এই বডি পার্ট সারানোর দায়িত্ব যাদের ছিল তাদের এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সূত্রের খবর তারাই জানে বডি কোথায় ফেলেছে। ওই ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ বেশ কিছু প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করেছে। ভারতের সিআইডির অন্ততপক্ষে ৬ টিম কাজ করছে।
১৩ মে যে তিনজনের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢুকেছিলেন আনার, তাদের মধ্যে দুজনকে ১৪ মে সকালে একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে বেরোতে দেখা যায়। ওই দিন বিকেলের দিকে বেরিয়ে যান আরো একজন, সিসিটিভিতে ধরা পড়েছে সেই ছবি। কিন্তু ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা গেলেও আনারকে বেরোতে দেখা যায়নি। পারিপার্শ্বিক এই তথ্য প্রমাণ থেকেই পুলিশ খুনের বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছে।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম ১২ মে চিকিৎসার জন্য দর্শনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। ১৬ মে থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। ২২ মে তাকে খুন করার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।
আনারের জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৯৬৮ সালে। পেশায় ব্যবসায়ী আনার আওয়ামী লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন।
ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে তিনবার (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) নির্বাচিত আনার একজন ক্রীড়া সংগঠক এবং একসময়ের জনপ্রিয় ফুটবল খেলোয়াড়।
ছাত্রজীবন থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে শুরু করেন। স্থানীয় পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর হিসেবে ভোটের রাজনীতি শুরু করেন তিনি। এরপর বিশাল ভোটের ব্যবধানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হন আনার। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনগুলোতেও তিনি জয়ের ব্যবধান দিয়ে জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন।