গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আঙ্কারা-তেলআবিব সম্পর্ক। অবরুদ্ধ উপত্যকায় নির্বিচার গণহত্যাকে কেন্দ্র করে গাজার স্বাধীনতাকামীদের প্রকাশ্যেই সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান।
এমনকি এর প্রতিবাদে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে তুরস্ক। আর তাতেই মহাবিপদে পড়েছে ইহুদিবাদী দেশটি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজাকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল ও তুরস্কের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। গেল কয়েক দশকে দুই দেশের সম্পর্কের ওপর বিভিন্ন বাধা এলেও তাতে বাণিজ্যিক কোনো প্রভাব পড়তে দেননি ইসরায়েলি ও তুর্কি ব্যবসায়ীরা। তবে এবার আর সেই ঝড় সামাল দিতে পারেনি কোনো পক্ষই।
বিগত সময়গুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারের অন্যান্য পক্ষের তুলনায় বেশ সস্তায় তুরস্ক থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে আসছিল ইসরায়েল।
এসব পণ্যের মধ্যে সিমেন্ট থেকে শুরু করে খাদ্য ও গাড়ি পর্যন্ত ছিল।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, হঠাৎ করেই তুর্কি সরকারের বাণিজ্য বন্ধের সিদ্ধান্তে ইসরায়েলি অর্থনীতিতে স্বল্প মেয়াদে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে না দেশটি।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় এরই মধ্যে তুর্কি পণ্যের বিকল্প উৎস খুঁজতে শুরু করেছে ইসরায়েলি ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, ২০২৩ সালে তুরস্ক ও ইসরায়েলের মধ্যে ৬২০ কোটি মার্কিন ডলারের ব্যবসা হয়েছে। তবে এই সংখ্যাটি ২০২২ সালের তুলনায় ২৩ শতাংশ কম।
ইসরায়েল বিল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল শেই পজনার জানান, তুরস্ক থেকে মোট সিমেন্টের ৪০ শতাংশ আমদানি করে ইসরায়েল। বর্তমানে ইসরায়েলি ব্যবসায়ীরা ইউরোপীয় সরবরাহকারীদের দিকে ঝুঁকছে। তবে এ ক্ষেত্রে তুরস্কের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ গুণতে হবে।
ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ শমুয়েল আব্রামজন বলেছেন, ইসরায়েলের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার হলো তুরস্ক। তুরস্কের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ফলে বিকল্প দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ কিছুটা বেশি হবে।
ইসরায়েলি বাণিজ্য কর্মকর্তারা জানান, তুরস্কের সিদ্ধান্তের জেরে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণ করতে চাইছে গ্রিস, ইতালি ও অন্যান্য দেশ। তবে তুরস্কের বাজারে দেড়শ কোটি ডলারের ইসরায়েলি রপ্তানি পণ্যের বাজার খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হবে।