রাজধানীর বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এক পুলিশ কনস্টেবলের গুলিতে প্রাণ গেছে আরেক কনস্টেবলের। নিহত ওই পুলিশ সদস্যের নাম মনিরুল ইসলাম। শনিবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১২টার এ ঘটনায় আহত হয়েছেন জাপান দূতাবাসের গাড়িচালকও। ঘটনার পর রাতেই পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয় ঘাতক কনস্টেবল কাউসার আলীকে। ইতোমধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এদিকে, ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে চ্যানেল 24 এর হাতে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তাকর্মীদের ডিউটি কক্ষের সামনে বাগ্বিতণ্ডা হয় কনস্টেবল কাওসার ও মনিরুলের মধ্যে। ডিউটি খাতা নিয়ে কিছু একটা বলছিলেন তারা। আচমকা কনস্টেবল কাওসার মনিরুলের দিকে খাতাটি ছুড়ে মারেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডিউটি কক্ষের ভেতর থেকে মনিরুলকে লক্ষ্য করে গুলি শুরু করেন কনস্টেবল কাওসার। পরে নিথর মনিরুলের অস্ত্রও মাটি থেকে হাতে তুলে নেন কনস্টেবল কাওসার। এরপর কিছুক্ষণ নির্বিকার হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন মরদেহের পাশে।
পরে এলোপাতাড়ি বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন কনস্টেবল কাওসার। এতে আহত হন জাপান দূতাবাসের একজন গাড়িচালক। ওই সময় ডিপ্লোমেটিক জোনে কর্তব্যরত অন্য পুলিশ দৌড়ে ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর নিরস্ত্র করে আটক করা হয় কনস্টেবল কাওসারকে। খবরে পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশপ্রধান।
শনিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আইজিপি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে আমাদের দুইজন কনস্টেবল ডিউটিরত ছিল। এদের মধ্যে কনস্টেবল কাউসার আলীর গুলিতে কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে মারা যান। এ ঘটনায় জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তার শরীরে ৩ রাউন্ড গুলি লেগেছে। আক্রমণকারী কনস্টেবলকে থানায় নেয়া হয়েছে এবং তাকে নিরস্ত্র করা হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। মনিরুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা কিছু গুলির খোসা এবং ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছি।’
হত্যাকাণ্ডের কারণ কি জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) প্রাথমিকভাবে বলেন, ‘ঘটনার কারণ জানতে আমরা কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করবো। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আক্রমণকারীকে আমরা ইতোমধ্যে আটক করেছি। ঘটনার প্রকৃত রহস্য জানাটা খুব কঠিন হবে না।’
ঘটনাস্থল থেকে আলামত জব্দের পর রাত ৩টার দিকে দূতাবাস এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে এ ঘটনার পর থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।