যশোরে ছাত্রলীগের এক নেত্রীর অন্তরঙ্গ ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওই নেত্রীকে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এমনকি আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে হোয়াটঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশর্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলাম যশোর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। আর ভুক্তভোগী ছাত্রী সরকারি এমএম কলেজ থেকে সম্প্রতি পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন।
এরইমধ্যে ঘটনার বিচার দাবি করে ভুক্তভোগী ওই নেত্রী কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগের কপি নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে তা স্ক্রিনশর্টও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সরবরাহ করেছেন।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, প্রায় দুই বছর আগে যশোর সরকারি এমএম কলেজের বাংলা বিভাগে পড়াশোনাকালে একই কলেজের ভূগোল বিভাগের ছাত্র ও জেলা ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয় একই সংগঠনের ওই নেত্রীর। এরপর আস্তে আস্তে তা প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। একে অপরকে দেয় বিয়ের প্রতিশ্রুতিও।
সম্পর্ক গভীর হলে তারা একসঙ্গে থাকা শুরু করেন। তরিকুল তার ভাড়া বাসায় স্ত্রী পরিচয়ে ওই নেত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়েন।
তবে সম্প্রতি মেয়েটি বিয়ের কথা বললে সম্পর্ক অস্বীকার করে তাকে খুনের ভয় দেখাচ্ছেন তরিকুল। এমনকি অন্যত্র বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে মেয়ে দেখছেন তরিকুলের পরিবার।
সম্প্রতি ভুক্তভোগী ওই নেত্রীর সঙ্গে একান্তে কাটানো মুহূর্তের বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর এ বিষয়ে ওই নেত্রীর সঙ্গে কথা হয় কালবেলা প্রতিবেদকের। ভুক্তভোগী তরুণী নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার নাতনি ও ছাত্রলীগ নেত্রী দাবি করে বলেন, ছাত্রলীগের দাপট দেখিয়ে তরিকুল আমার জীবনটাকে তছনছ করে দিয়েছে। এখন বিয়ে করতে অস্বীকার করছে। প্রেম করে কিছু করলেই বিয়ে করতে হবে এমন কোনো কথা নেই বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি তরিকুলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ও জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি-সম্পাদকের কাছে অভিযোগ করেছি। তার বাবা-দুলাভাইকেও জানিয়েছি। এরপরেও বিচার না পেলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তরিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এসব বিষয়ে জানতে গত দুইদিন ধরে যশোর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সালাউদ্দিন পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তাদের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।
তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, এমন কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। তবে এমন কিছু পেলে অবশ্যই তদন্তপূর্বক তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছাত্রলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, তরিকুল ইসলাম সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।