ভারতের উত্তর-পূর্বে ভুটান সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যের এক শহর ডালগাও। পশ্চিম ভারতের সাথে যার যোগাযোগটা বেশ দুরূহ। যেতে হয় চিকেন্স নেক ঘুরে। তবে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করলে এ পথের দূরত্ব কমে আসবে অন্তত ৩শ কিলোমিটার। সেই চেষ্টাই করছে ভারত।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে চুক্তি হয়েছে এ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেন, এই সমঝোতার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটান একটি যোগাযোগের বলয়ের মধ্যে আসবে।
সমঝোতা অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ থেকে ছেড়ে গেদে হয়ে ভারতের মালবাহী ট্রেন বাংলাদেশ ভূখণ্ডে প্রবেশ করবে দর্শনা দিয়ে। এরপর ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটি হয়ে ট্রেন হলদিবাড়ি দিয়ে আবার ভারতে যাবে। যা সেভেন সিস্টার্স কে যুক্ত করবে ভারতের মূল ভূখণ্ডের সাথে। পুরো প্রক্রিয়ার ট্রানজিট ফি নির্ধারণ থেকে শুরু করে সার্বিক বিষয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
সরদার সাহাদাত আলী বলেন, সমঝোতা স্মারকে স্পষ্ট বলে দেয়া আছে একটি উচ্চ পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে যারা এ বিষয়ের উপর সার্বিক পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে কিভাবে কি হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত যদি দৈনিক একটি করে ট্রেন চালায় তবে কোন সমস্যা হবার কথা নয়, তবে তারা যদি দৈনিক ২০টি ট্রেন চালায় তবে সে বিষয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।
কতটুকু নির্ধারণ করা উচিত এ পথের ট্রানজিট ফি? কিংবা বাংলাদেশের স্বার্থই বা এ ক্ষেত্রে সংরক্ষিত হবে কিভাবে? এমন প্রশ্নে বিশ্লেষকরা বলছেন, দরকষাকষিতে থাকতে হবে সতর্ক। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ শামসুল হক এ বিষয়ে বলেন, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এ রেল যোগাযোগে লাভবান হবে ভারত। কারণ তাদের পথ কমে যাচ্ছে সেই সঙ্গে আমাদের অবকাঠামো ব্যবহার করায় তাদের রেললাইনের অবচয় হবে না হবে বাংলাদেশের। এ জন্যে আমাদের লাভের অংশ যেমন নিবো তেমনি আমাদের অবকাঠামো অবচয়ের খরচও নিতে হবে। এভাবে দর কষাকষি করলেই সুবিবেচনা করা হবে বলে আমি মনে করি।
এদিকে অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের দেশের জন্যে এখানে আমাদের কি লাভ হচ্ছে, ট্রানজিট ফি ও অবকাঠামো ব্যবহারে লাভ-ক্ষতি নির্ধারণের সময় সেটা ঠিক করে নিতে হবে।
রাজশাহী থেকে কলকাতায় সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলেও আগ্রহী দুই দেশ।