একটা নয় দুটি নয়। একে একে চার শতাধিক কবর খুঁড়েছেন ফেনীর পরশুরামের বাসিন্দা আলী আকবর। দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ মৃত মানুষের শেষ ঠিকানা কবর খুঁড়ে চলেছেন এ বৃদ্ধ। কবর খোঁড়াই যেন তার নেশা। কবর খুঁড়েই শান্ত নন তিনি, নিজ হাতে খোঁড়া এসব কবরে শুয়েছেনও। অনুভবের চেষ্টা করেছেন কেমন লাগে সাড়ে তিন ফুটের এই মাটির ঘরে একাকী। ২০ বছর বয়স থেকে এ কাজে যুক্ত আছেন আলী আকবর। আশপাশে মানুষের মৃত্যুর খবর পেলেই কবর খোঁড়ার সরঞ্জাম নিয়ে বেরিয়ে পড়েন আজও।
ফেনীর পরশুরামের পূর্ব নিজ কালিকাপুর গ্রামের বাসিন্দা আলী আকবর। তিনি ওই গ্রামের জুলখু মিয়ার ছেলে। ১৯৭৬ সাল থেকে কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করেন তিনি।
মৃত মানুষের কবর খুঁড়েই স্বস্তি পান আলী আকবর। বয়স ৭০ ছুঁইছুঁই। কিন্তু তার মনোবল ও পরিশ্রম দেখে মনে হয় এখনো ২৫ বছরের টগবগে যুবক। কৃষিকাজের পাশাপাশি একটি মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন। মানুষ মারা যাওয়ার খবর তার কানে আসলে শত ব্যস্ততা রেখে ছুটে যান কবর খুঁড়তে। এভাবে ৪০ বছর ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে কবর খুঁড়ে চলছেন তিনি।
আলী আকবর জানান, যখন তার বয়স ২০ বছর তখন থেকে তিনি কবর খুঁড়েন। মানুষ মারা গেলে কবর খোঁড়ার ডাক পড়ে। কবর খোঁড়ার সরঞ্জাম নিয়ে চলে যান কবর খুঁড়তে। আবার দূরদূরান্ত থেকে মানুষ মারা যাওয়ার খবর তার কানে আসলে শত কাজ রেখে ছুটে যান। ছুটে যান মৃত ব্যক্তির জন্য কবর খুঁড়তে। তার এলাকা ও আশপাশের অনেক কবরস্থানে ৪০ বছর ধরে প্রায় ৪ শতাধিক কবর খুঁড়েছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা ইকরামুল কাদের জানান, তিনি কোনো ধরনের পারিশ্রমিক ছাড়াই কঠিন এই কাজটি করেন। বর্তমানে এমন নিবেদিত মানুষ পাওয়া যায় না। সেই ছোটবেলা থেকেই দেখেছি কোথাও কোনো মানুষ মারা গেলে সবার আগে কবর খুঁড়তে তিনি ছুটে যান। রোদ ঝড়বৃষ্টি যত সমস্যাই থাকুক না কেনো, আলী কাকা সবার আগে পৌঁছে যায় কবরস্থানে।