জয়পুরহাট রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে একতা এক্সপ্রেস ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন প্রসূতি বাবলি রানী। বাবার বাড়িতে দিনাজপুরের বিরামপুরে যাচ্ছিলেন তিনি। রেলস্টেশনে অপেক্ষারত অবস্থায় হঠাৎ প্রসবব্যথা বেড়ে যায় তার। কোনো উপায় না পেয়ে তার সঙ্গের আত্মীয়রা সহযোগিতা চান আশেপাশের যাত্রীদের। পরে রেলওয়ে পুলিশ ও এক নারীর সহযোগিতায় স্টেশনেই ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন বাবলি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (৫ জুলাই) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজাউল ইসলাম।
কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়া বাবলি রানী জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী বাবু পাড়া গ্রামের সুকুমার চন্দ্রের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুরের আমবাড়িতে। সন্তান প্রসবের পর মা ও কন্যাসন্তান দুজনই সুস্থ আছেন।
নাসিমা আক্তার নামে এক নারী বলেন, ‘আমি বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরি করি। জয়পুরহাটে মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। আজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ পাশে বসা এক নারী প্রসব বেদনা নিয়ে ছটফট করছিলেন। তাকে সহযোগিতা করি। তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। অনেক ভালো লেগেছে। ভালো কাজটি করতে পেরে।’
বাবলি রানী বলেন, ‘আমি প্রথমবার মা হলাম। আসলে বুঝতেই পারিনি আমার সন্তান প্রসবের সময় হয়েছে। হয়তোবা আমার গণনায় ভুল ছিল। বাবার বাড়িতে গিয়ে সন্তান জন্ম দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। আমার মা ও দুলাভাই নিতে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলাম। ধন্যবাদ জানাই প্রসবের সময় রেলওয়ে পুলিশ, স্টেশন মাস্টার ও এক নারীর সহযোগিতার জন্য।’
জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘অফিস শেষ করে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছি। হঠাৎ খবর পাই যে, এক নারী প্রসব বেদনায় স্টেশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাৎক্ষণিক পুলিশের সহযোগিতায় এক নারীকে সহযোগিতার জন্য পাঠানো হয়। তারা সন্তান প্রসবের জন্য প্রসূতিকে সব ধরনের সহযোগিতা করেন। এতে নিরাপদে সন্তান প্রসব হয়। এই আনন্দের মুহূর্তকে ভাগ করতে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের যাত্রীদের মিষ্টি খাওয়ানো হয়।’