ফরিদপুরের সালথায় পরকীয়ার মানুষটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে গণধোলাই খেয়েছেন মো. সবুজ সরদার নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।
পরে ওই নেতাকে চেয়ারে বেঁধে গণধোলাই দেওয়া হয়। এ ঘটনার ৪০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার (৬ জুলাই) সকালে উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের মুরাটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার মো. সবুজ সরদার উপজেলার মাঝারদিয়া গ্রামের মো. নান্নু সরদারের ছেলে। তিনি সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, চেয়ারে বসিয়ে রাখা হয়েছে সবুজ সরদারকে। তার হাত বাঁধা। একজন তার শার্টের কলার ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ সময় সবুজকে উপস্থিত সবার কাছে নিজের পরিচয় তুলে ধরতে শোনা যায়।
স্থানীয়রা জানান, দলীয়পদ ব্যবহার করে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে সবুজ। তার স্ত্রী ও দুটি সন্তান রয়েছে। তারপরেও পাশের মুরাটিয়া গ্রামের ৪ সন্তানের জননী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া করতে আসে।
এর মধ্যে ওই নারীর বাড়িতে শনিবার সকালে দেখা করতে এলে নারীর স্বামীর সহযোগিতায় স্থানীয়রা সবুজকে ধরে ফেলেন। পরে তাকে চেয়ারে বেঁধে গণধোলাই দেওয়া হয়।
ওই নারীর স্বামী জানান, গত ৪/৫ দিন ধরে আমার স্ত্রীকে মোবাইলে ফোন দিয়ে পরকীয়ার সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দিত সবুজ। আমার স্ত্রী নিষেধ করার পরও সে ফোন দিত। একপর্যায়ে শনিবার সকালে আমার বাড়ির পাশে দেখা করতে আসে সবুজ।
তখন আমি তাকে ধরে ফেলি এবং গ্রামবাসীকে খবর দেই। সবুজকে ধরে চেয়ারে বেঁধে পিটিয়েছি। গ্রামের স্থানীয় মাতব্বরদের মাধ্যমে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি মীমাংসা করে ফেলেছি। তবে স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
তবে এসব ঘটনা ষড়যন্ত্র ও সাজানো বলে দাবি করেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মো. সবুজ সরদার। তিনি ভিডিওর কথা স্বীকার করে কালবেলাকে বলেন, বেঁধে রাখা হয় নাই আমাকে। এমনি শরীরে হাত দিয়েছিল। আমি ওই নারীর সঙ্গে কথা বলতাম তাই দেখা করতে গিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি আমি।
ওই নারীকে ফোন দেওয়ার ঘটনা স্বীকার করে সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আরও বলেন, রং নম্বরে আমি তাকে আগে ফোন দেই। তারপর কথা বলি সেও কথা বলত। পরে বাড়ির পাশের রাস্তায় ডেকে নিয়ে আমাকে হেনস্থা করে।
সালথা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জুয়েল বলেন, সবুজ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি। তবে কারো ব্যক্তি অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না। আমি ভিডিওগুলো দেখেছি। এগুলো যাচাইবাছাই করে সত্যতা পেলে সবুজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়সাল আহম্মেদ রবিন বলেন, অন্যান্য আরও সাংবাদিকদের থেকে ঘটনা জেনেছি। তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আগামী তিনদিনের মধ্যে বিষয়টির সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালথা থানার ওসি মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান কালবেলাকে বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। আমরা কিছুই জানি না এ বিষয়ে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনিব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।