চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টার পর থেকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন তল্লাশি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় তিন শিক্ষার্থীকে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেন তারা। রাত ৮টায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ টায়। তল্লাশির সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা মূল ফটকের কাছেই উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে প্রক্টরিয়াল বডি দু’জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয় এবং একজনকে পুলিশে সোপর্দ করে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষোভের পর বিকেল থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। হামলা ও সংঘর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সংগঠনটির চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। তাদের হাতে ছিল হকিস্টিক, লাঠি, রড, জিআই পাইপসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র। নগরের বিভিন্ন স্থানে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়তেও দেখা যায় কয়েকজন অস্ত্রধারীকে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, রাতে ক্যাম্পাসে ফেরার পর ছাত্রলীগ তাদের ফোন নিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে, শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনে যুক্ত কিনা তা দেখতে। এ সময় তাদের নাম, আইডি কার্ড দেখাতে হয়েছে। আন্দোলনে সম্পৃক্ততা পেলেই মারধর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিজয় গ্রুপের নেতা ইলিয়াস হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে আমরা তালা দেইনি। প্রশাসন ফটকে তালা দিয়েছে। কারণ, প্রশাসনের কাছে তথ্য ছিল বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে আক্রমণ করতে পারে। আমাদের কাছেও তথ্যটা আসার পর আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শক্ত অবস্থানে আছি। তবে আমরা এখানে দেখেছি দুজন শিক্ষার্থীর ব্যাগে অস্ত্র ছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের কাছে তাদের সোপর্দ করেছি। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শান্ত রয়েছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরাও নিরাপদ।
সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা সাইদুল ইসলাম সাইদ বলেন, প্রশাসন তালা দিয়েছে। তারা তথ্য পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত ঢুকছে। এ জন্য বহিরাগত ঠেকাতে আইডি কার্ড চেক করে ও নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করে তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন, বহিরাগতরা আক্রমণ করতে পারে এমন অভিযোগ করেছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাই তারা তল্লাশি করেছেন। যাদের কাছে আইডি কার্ড পাওয়া গেছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হয়েছে।
তিন শিক্ষার্থীর বিষয়ে প্রক্টর জানান, তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বলে জানতে পেরেছেন। তাদের একজনের ফেসবুকে বিভিন্ন গুজব রটানোর তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া ব্যাগের ভেতরে রডসহ কিছু দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেছে। এ কারণে তাকে পুলিশে দেয়া হয়েছে।