24 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

‘ভালো থাকিস বাবা, মুইও তাড়াতাড়ি তোর কাছোত আসিম’ বলে সাঈদকে চিরবিদায় দিলেন মা

কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলিতে নিহত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বোরোবি) ছাত্র আবু সাঈদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর নালিপাড়া গ্রামে তাকে দাফন করা হয়েছে।

শেষবারের মতো সন্তানের মুখ দেখার জন্য মা মনোয়ারা বেগমকে ডাকা হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে তিনি ‘যা বাবা, ভালো থাকিস। চিন্তা করিস না। মুইও তাড়াতাড়ি তোর কাছোত আসিম’ বলে ছেলেকে চিরবিদায় জানান।

আবু সাঈদের কফিন ঘাড়ে করে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির অদূরের জাফরপাড়া কামিল মাদরাসা মাঠে। সেখানে প্রশাসনের দেয়া পূর্বনির্ধারিত সময় সকাল ৯টার আগেই জানাজায় উপস্থিত লোকজন লাইনে দাঁড়ান।

আরো পড়ুন  স্বামীর দুর্নীতিতে জেলে গেলেন তিন স্ত্রী, ‌‘দুদকের বিশাল সাফল্য’

এ সময় সেখানে বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল হাসান, নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন সফিক আশরাফ, শিক্ষার্থী আতিব আল মুবিন, জাফরপাড়া মসজিদের খতিব আজহার আলী, স্থানীয় বাসিন্দা রজব আলী ও সোহানুর রহমান। ইউএনও ছাড়া বাকিরা আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়, সেই দাবি জানান।

জানাজায় উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন হাত উঁচিয়ে স্লোগান দেন, ‘আমার ভাই মরল কেন? জবাব চাই, বিচার চাই’, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, মানতে হবে’ ইত্যাদি। হট্টগোলের মধ্যেই ইউএনও জানাজা শেষ করে লাশ দাফনের উদ্দেশ্যে নিতে চাইলে উপস্থিত লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

আরো পড়ুন  কোটা ইস্যুতে কথা বলায় ইমামদের চাকরিচ্যুত, যা বললেন আহমাদুল্লাহ

ইউএনও তখন লাশ সেখানে রেখে ঘটনাস্থল ছেড়ে যান। এরপর মাদরাসা মাঠে লাশ ঘিরে টানা অন্তত ১০ মিনিট স্লোগান চলতে থাকে। সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও কিছু শিক্ষক–শিক্ষার্থী এলে দ্বিতীয় দফায় জানাজা হয়। সোয়া ১০টার দিকে নিহত আবু সাঈদের লাশ বাবনপুর নালিপাড়া গ্রামে তার বাড়ির পাশে দাফন করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে বোরোবিতে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আবু সাঈদ নিহত হন। তার শরীরে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন পাওয়া গেছে। জানা গেছে, দুপুরে বেরোবির কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের লালবাগ এলাকায় থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যান। এরপর ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও ছররা গুলি ছোড়ে। এ সংঘর্ষে নিহত হন তিনি।

আরো পড়ুন  এক নার্সের এত ক্ষমতা! শাস্তি পেয়েও শোধরাননি
সর্বশেষ সংবাদ