কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল ইন্টারনেট সীমিত করা হয়। পর দিন (১৮ জুলাই) মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ও গুজব প্রতিরোধে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে সে সময় তিনি উল্লেখ করেছিলেন। একই দিন সন্ধ্যায় সঞ্চালন লাইনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বন্ধ হয়ে যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটও। ফলে দেশজুড়ে সব ধরনের ইন্টারনেট যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
এমন প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়। এরপর রোববার (২৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় মোবাইলের ফোরজি সেবা চালু করা হয়। ইন্টারনেট চালু করা হলেও বন্ধ ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও টিকটক।
দেশে ১৪ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুর থেকে চালু হয় ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এসব কারণে গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় ছিলেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এরই মধ্যে প্রতিমন্ত্রী পলকের একটি পারিবারিক ছবি ইডিট করে বিকৃত করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রচারিত ছবিতে প্রতিমন্ত্রী পলকের সঙ্গে থাকা নারী তারই স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকা। তবে ভাইরাল হওয়া ছবিটি এডিটেড। প্রকৃতপক্ষে ২০১২ সালে জুনাইদ আহমেদ পলক নিজের ফেসবুক পেজে ক্যাপশনে তিনি ও তার স্ত্রী শীর্ষক বাক্য রেখে এ সংক্রান্ত মূল যে ছবিটি পোস্ট করেছিলেন তাতে দুজনই পোশাক পরিহিত ছিলেন। সম্প্রতি সেই ছবিটিই সম্পাদনা করে ‘আপত্তিকর’ রূপ দিয়ে ইন্টারনেটে প্রচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশের একটি ফ্যাক্টচেক সংস্থা রিউমর স্ক্যানারের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে সার্চ ইঞ্জিন গুগলে জুনাইদ আহমেদ পলকের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের বরাতে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
রিউমর স্ক্যানার টিম তাদের অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, গুগলের দেখানো পোস্ট প্রিভিউতেই মূল পোস্টের ক্যাপশনের লেখাটি দেখা যায়। সেখানে Me & Bou লেখা ছিল এবং ছবিটি ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়।
পরবর্তীতে পলকের ফেসবুক পেজে মূল ছবি সংবলিত পোস্টটি খুজে পাওয়া যায়। তবে পলকের পোস্ট করা ছবিতে তাকে এবং তার স্ত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায়নি। দুজনের শরীরে পোশাক থাকা এই ছবিটিকে সম্পাদনার মাধ্যমে পোশাকগুলো সরিয়ে আপত্তিকর বানিয়ে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।
সুতরাং, প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর দৃশ্য দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত এই ছবিটি বিকৃত বা সম্পাদিত।