১৮ জুলাই, ২০২৪। দেশজুড়ে যখন পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ এর কাছাকাছি, তখন ১৪ দলের বৈঠক থেকেই সিদ্ধান্ত হয় যেকোনো মূল্যে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ প্রতিহত করার। এর ১১ দিন পর ২৯ জুলাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গণভবনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বৈঠক হয় ১৪ দলের। ওইদিনও বলা হয়, এই আন্দোলন ছাত্র-জনতার নয়, বিএনপি-জামায়াতের। অথচ ততদিনে মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকশ’ পেরিয়ে গেছে। এত মানুষের মৃত্যুর পরও এ নিয়ে বৈঠকে টু শব্দটুকু করেননি ১৪ দলের নেতারা।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নিজেদের উপলব্ধি কি, তা জানতে যোগাযোগ করা হয় ১৪ দলের সিনিয়রদের সঙ্গে। বন্ধ পাওয়া যায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোন। আর ফোন ধরেননি ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। তবে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশাহকে ফোনে পাওয়া গেলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এ ছাড়া জাতীয় পার্টি- জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া এখন আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো দায় নিতে চান না।
যাদের হাত ধরে পুনর্জন্ম হয়েছে এই বাংলাদেশের তাদের প্রতিনিধি আখতার হোসেন বলছেন, জবাবদিহির বাইরে থাকবে না শেখ হাসিনার দোসররা। তিনি বলেন, ওইসময়ও কি তারা জোট থেকে বের হয়ে এসেছিলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন? কোনোভাবে শিক্ষার্থীদের পাশে তাদের অবস্থান জানান দিয়েছিলেন? এমনটা কিন্তু হয়নি। অথচ আমরা দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আন্দোলন শুরু হয় অনেক ছাত্রলীগ নেতাই পদত্যাগ করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
মানবাধিকার কর্মী নূর খান বলেন, এতদিন ক্ষমতার গুড় খেয়ে এখন অস্বীকার করবে তা কোনোদিনই কাম্য নয়। রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু- এদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আসতে হবে। তাদের অনেকের পরামর্শে আমরা দেখেছি কারফিউ জারি থেকে জনগণকে হত্যার অনুমোদন দিয়ে আসছিল শেখ হাসিনার সরকার।
তার মতে, গেল ১৬ বছরের পচে যাওয়া সমাজের দৃষ্টান্ত আওয়ামী লীগের এই জোট সঙ্গীরাও। স্বৈরাচারকে শক্তিশালী করার জন্য তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।