29 C
Dhaka
Wednesday, September 11, 2024

গণধোলাই খেলেন ভুয়া সমন্বয়ক, জানা গেল রাজনৈতিক পরিচয়

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাঁথিয়া উপজেলা শাখার স্বঘোষিত ভুয়া প্রধান সমন্বয়ক ও ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন শিশির (২৯)। শনিবার (৩১ আগস্ট) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিশির উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও কোনাবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে।

সাঁথিয়া থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাঁথিয়া উপজেলা শাখার স্বঘোষিত ভুয়া সভাপতি ও ছাত্রদলের নেতা শিশির শনিবার বিকেলে মেয়াদ উত্তীর্ণ কোকাকোলা বিক্রির অভিযোগ নিয়ে অপর বন্ধু ও কোনাবাড়িয়া গ্রামের জুয়েলের ছেলে সানীকে (৩০) নিয়ে ধোপাদহ বাজারের মনিরুজ্জামানের দোকানে যান।

পরে দোকানে গিয়ে জানান মেয়াদ উত্তীর্ণ কোকাকোলা বিক্রয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাদের পাঠিয়েছেন। ওই সময় রোকনুজ্জামান ও তার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে তারা মোটরসাইকেলযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে আসেন। তবে শিশির ও তার বন্ধুরা উপজেলা চত্বরে এসে ইউএনও’র কাছে না গিয়ে কৌশলে তাদের পরিষদের পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। এ সময় কোনাবাড়ীয়া গ্রামের মধুর ছেলে শাকিল (৩২) ও মিলটনের ছেলে তালহা (২৫) তাদের সঙ্গে ছিলেন।

আরো পড়ুন  খাটের ওপর শিশুর লাশ, টয়লেটে রক্তাক্ত মা

তারা দোকানদার মনিরুজ্জামানকে বলে, ইউএনও’র কাছে গিয়েছিলাম। ইউএনও স্যার তোর ২ লাখ টাকা জরিমানা করবে। এখন তুই কি করবি বল। একপর্যায়ে মনিরুজ্জামান ভয়ে বলেন, ভাই আমার কাছে তো অতো টাকা নাই কি করবো আমি? তখন শিশির বলে, তুই এক লাখ টাকা দিয়ে চলে যা, তাহলে তোর আরও ১ লাখ টাকা বাঁচবে। ইউএনও আসলে কিন্তু তোর ২ লাখ টাকাই দিতে হবে। একপর্যায়ে দোকানদার মনিরুজ্জামান ভয়ে ৬০ হাজার টাকা জোগাড় করে তাদের হাতে দিয়ে চলে যায়।

আরো পড়ুন  আদম তমিজী হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

বিষয়টি জানাজানি হলে আলোচনার প্রেক্ষিতে দোকানি মনিরুজ্জামান থানায় ও সেনাবাহিনী ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে এ বিষয়ে কেন লিখিত অভিযোগ দিলেন এজন্য পুনরায় মনিরুজ্জামানকে ভয়ভীতি দেখাতে শিশির ও সানী ধোপাদহ বাজারে যায়। ওই সময় এলাকাবাসী দোকানি মনিরুজ্জামানকে ভয় দেখানো বিষয়টি টের পেয়ে শিশিরকে ধরে গণধোলাই দেয়। তবে সঙ্গে থাকা সানী কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেয়। একপর্যায়ে চাঁদা নেয়া ৬০ হাজার টাকা থানা পুলিশের কাছে ফেরত দেয় শিশির।

আরো পড়ুন  মেয়ের আনা লিচু খাওয়ার সময় গলায় বিচি আটকে বাবার মৃত্যু

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ‘এ ব্যাপারে সাঁথিয়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে ৪ জনের নামে মামলা হয়েছে। আটক শিশিরকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

সার্বিক বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার নামে চাঁদাবাজি করে সে অবশ্যই জঘন্যতম কাজ করেছে। আমার নামে যদি কেউ চাঁদা দাবি করে তাহলে কেউ চাঁদা দেবেন না এবং আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সর্বশেষ সংবাদ