অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংলাপে জাতীয় পার্টির ডাক না পেলে কোনো আপত্তি থাকবে না। কিন্তু দলের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে তা বিব্রতকর। আমাদের ওপর দোষ চাপানো অন্যায় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের গঠন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্কারে আমরা সহযোগিতা করছি যাতে সঠিক পথে চলতে পারে। সরকার চাইলে আমরা বিভিন্ন কাজে তাদের পরামর্শ দেব। কিন্তু হঠাৎ করে সংলাপে না ডাকলে আমাদের আপত্তির কারণ নেই। তবে আপত্তি হলো আমাদের দোষারোপ করে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ১৪, ১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরকারের দোসর বলা হচ্ছে। এ অভিযোগ সঠিক নয়। ১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ২৭০ প্রার্থীকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু আমার এবং আমার ভাইয়ের (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) প্রত্যাহারের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। আমাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার অফার দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আমি গ্রহণ করিনি। নির্বাচনে বাধ্য করতে পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সিএমএইচে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবুও জাতীয় পার্টি নির্বাচন বর্জন করেছিল। পরে রওশন এরশাদসহ কয়েকজনকে জোর করে সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তারা কয়েকটি মেয়র নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কয়েকটি ধাপে অংশগ্রহণ করে। জাতীয় পার্টি সরকারকে অর্ধেক বৈধতা দিলে বিএনপিও অর্ধেক বৈধতা দিয়েছে। এই সরকারের আমলে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্যরা চার বছর পর্যন্ত সংসদে ছিল। এই সরকারকে সবাই মিলেই বৈধতা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমাদের ওপর এই দোষ চাপানো অন্যায়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের মধ্যে বিভক্তি ঢুকিয়ে নানামুখী চাপে এ নির্বাচনের সরকার জাতীয় পার্টিকে বাধ্য করেছিল। তবে আমরা সব সময় বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছি এবং সরকারের সমালোচনা করেছি।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টির অবদান আছে। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। তবে আমাদের যদি না ডাকা হয় যদি দোষারোপ করা হয় তাহলে আমাদের ওপর জুলুম করা হবে। আর এ দেশের জনগণ জুলুমকারীদের বিপক্ষে দাঁড়াবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ইয়াসির, ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন লেবু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামান নাজিম, কেন্দ্রীয় সদস্য লোকমান হোসেনসহ জাতীয় পার্টির অঙ্গ দলের নেতারা।