চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে চট্টগ্রাম ডেভেলপমেন্ট ফোরাম (সিডিএফ)। রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ফোরামটির আত্মপ্রকাশ হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ এনামকে সভাপতি এবং চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন জহুরকে সাধারণ সম্পাদক করে কার্যকরি কমিটি গঠন করা হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক জাহিদ বিন রহিম, প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম, মাওলানা আবদুন নবী, মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান, খোরশেদ আলম, বদিউল আলম সওদাগর, ওমর কাইয়ুম পারভেজ প্রমুখ।
বৈঠকে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদপিণ্ড হচ্ছে চট্টগ্রাম। দেশের সিংহভাগ রাজস্ব এই চট্টগ্রাম দিয়েই আহরণ হয়। অথচ চট্টগ্রামকে এখনো একটি কার্যকর বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তোলা যায়নি। এক সময় চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর ছিল। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হলো এসব প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর এখন ঢাকায়। এ কারণে চট্টগ্রামের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক-চেয়ারম্যানদের কার্যালয়ও ঢাকায়। দেশের বাণিজ্যিক হাব হিসেবে খ্যাত চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংকের ঋণ নেওয়ার জন্যও ঢাকায় ছুটতে হয়। তাই চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানীর তকমা দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর সঙ্গে উপহাস করা ছাড়া আর কিছুই হয়নি। বঞ্চিত চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামবাসীর উন্নয়ন কান্নাকে ধারণ করে সিডিএফ কাজ করবে।
সভায় বলা হয়, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর ২৪ বছর এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫৪ বছরেও চট্টগ্রাম নানা দিক থেকে অবহেলার শিকার। অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পযর্টন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নির্বিঘ্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অনেক পেছনে পড়ে রয়েছে। অথচ এখানে রয়েছে পুরোদেশের অর্থনীতির প্রানভোমরা খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দর। নদী, সাগর, পাহাড় ও সমতলের অপূর্ব মিলন কেন্দ্র এ চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়ন এখন সময়ের চাহিদা।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম উন্নত হওয়া মানে বাংলাদেশ উন্নত হওয়া’ এ বাস্তবতাটুকু উপলব্দি করতে বিগত সরকারগুলো ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গত ১৫ বছরে সরকার অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র ফ্লাইওভার নির্মাণ, অপ্রয়োজনীয় টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম শহরকে ‘উন্নয়ন জঞ্জালে’ পরিণত করেছে। আর সুযোগ থাকার পরও চট্টগ্রামের মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক হাসপাতাল, বার্ন হাসপাতাল, কালুরঘাট সেতু, পরিকল্পিত সিআরবি এলাকা, সরকারি বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা কোনোটাই হয়নি।