যশোরের ঝিকরগাছায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাধা দেওয়ার জেরে আবদুল হক নামে এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। পরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে থানার সামনে আবারও ওই শিক্ষককে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ঝিকরগাছায় থানায় মামলা করেছে আহত শিক্ষকের ছেলে তরিকুল ইসলাম।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ঝিকরগাছা থানার সামনের রাস্তায় হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার মোমিনুরের পরিবার শিক্ষক আব্দুল হকের জমির সীমানার ভেতরে ঢুকে পাকা প্রাচীর নির্মাণ করলে প্রতিবাদ করেন শিক্ষকের ছেলে তরিকুল। এতে মোমিনুর ক্ষিপ্ত হয়ে তরিকুলের ওপর হামলা করেন। তখন ছেলেকে বাঁচাতে গেলে শিক্ষক আব্দুল হককেও মারধর করে জখম করেন মোমিনুর ও তার বাবা আজগর গাজী।
তারা আরও বলেন, মোমিনুর মদনপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুথানে হাসিনা সরকারের পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মিশতে শুরু করে। শিক্ষকের ওপর হামলার পরে পুলিশ কয়েকজন আটক করে থানায় নিয়ে গেলে স্থানীয় ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীরা তাদের থানা থেকে ছাড়িয়ে আনে।
আহত শিক্ষক আবদুল হক বলেন, শনিবারের ঘটনার পর তারা রাস্তায় বের হলে মারধর করা হবে এমন হুমকি দেয় মোমিনুর। এমনকি আমার ছেলে তরিকুলের মুরগির খামার পুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে। গত কয়েক দিন আতঙ্কের কারণে তারা বাসা থেকে বের হতে পারেননি। এর মধ্যে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে সোমবার দুপুরের দিকে ঝিকরগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করি।
তিনি বলেন, জিডি করে থানা থেকে বের হওয়ার পরপরই মোমিনুর, তার ভাই আমিনুর, বাপ্পী ও সৈকত আমাদের ওপর হামলা করে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় আমাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। এ ঘটনায় রাতেই চারজনকে আসামি করে ঝিকরগাছায় থানায় একটি মামলা করেছে আমার ছেলে তরিকুল। বর্তমানে আমরা পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
ঝিকরগাছা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম রানা বলেন, পৌর যুবদলের সভাপতি আরাফাত কোমলের ফোন পেয়ে থানায় যাই। কারও পক্ষে নয়, দুজনই এলাকার লোক, তাই মীমাংসার জন্য সেখানে গিয়েছিলাম।
ঝিকরগাছা পৌর যুবদলের সভাপতি আরাফাত কোমল বলেন, মোমিনুর ছাত্রদল বা যুবদলের রাজনীতি করেন না। তবে তারা দুই পরিবারের বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা করবেন এমনটা শুনেছেন। চাইলে মামলাও করতে পারেন।
পৌর যুবদলের সদস্য সচিব জনি বলেন, মোমিনুরকে সহযোগিতা করার অভিযোগ সত্য নয়। তারা আগে ঝামেলা করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা করতে স্থানীয়রা চেষ্টা করছেন এমনটা শুনেছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মমিনুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঝিকরগাছা থানার ওসি (তদন্ত) ইব্রাহিম আলী বলেন, শিক্ষক আবদুল হক থানায় জিডি করে বের হওয়ার সময় রাস্তায় তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এদিন রাতে তার ছেলে তরিকুল বাদী হয়ে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছে। পুলিশ আসামিদের ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছে।
আসামিকে ধরে আবার ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কাউকে আটক করা হয়নি। তবে তারা আরেকটি অভিযোগ করতে থানায় এসেছিল। মামলা রুজু হয়েছে তারা চলে যাওয়ার পরে।