বগুড়ার বাজারে আগাম শীতের সবজি উঠতে শুরু করায় দাম অনেকটায় কমতে শুরু করেছে। ১৫ দিন আগে লাগাতার বৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণে দাঁড়ায়। সেই সময় বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে মাঠ থেকে সবজি সংগ্রহ করতে না পারায় বাজারে সরবরাহ কমে যায়। তবে এখন বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় মাঠে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন আগাম সবজি। সেগুলো বাজারেও উঠতে শুরু করায় দাম অনেকটায় কমতে শুরু করেছে। পটোল, বেগুন ও কচুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম ১৫ দিনের ব্যবধানে অনেকটায় কমেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ সবজির মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাটের বিভিন্ন আড়ৎ ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
মোকাম ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতি মণে ২০০ থেকে ১০০০ টাকা কমেছে প্রতিটি সবজির দাম। কৃষকরা বলছেন, বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করায় দাম কমছে। গত ১৫ দিনের তুলনায় প্রতিটি সবজির দাম মণে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এর মধ্যে করলা গত ১৫ দিন আগে ৩০০০-৩২০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হলেও বুধবার (১৬ অক্টোবর) তা কমে বিক্রি হয়েছে ২৬০০-২৭০০ টাকায়। একইভাবে বেগুন ৩০০০ টাকা মণ থেকে কমে ২৪০০-২৬০০ টাকায়, পটল ২২০০ টাকা থেকে কমে ১৭০০-১৮০০ টাকায়, মুলা ২২০০-২৫০০ টাকা থেকে কমে ১০০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়াও কচু ২২০০ টাকা মণ থেকে কমে ১৮০০-২২০০ টাকায়, ফুলকপি ৪৫০০ মণ থেকে নেমে ৩০০০-৩২০০ টাকায়, ঝিঙ্গা ১২০০ টাকা থেকে কমে ১০০০ টাকায়, শসা ২৫০০-২৬০০ টাকা থেকে নেমে ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়াও বাঁধাকপি ৪৫ টাকা পিস দরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, লাউ প্রতি পিস আগে ছিল ৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। কাঁচামরিচের দাম কেজিপ্রতি আগে থেকেই ৩০০ টাকা ছিল এখন তাই আছে। বরবটি কেজি আগে ১১০ টাকা থাকলেও এখন ৮০-৯০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
তবে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে মিষ্টি লাউয়ের। আগে প্রতি কেজি মিষ্টি লাউ ৪৫-৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। তবে পেঁয়াজ প্রতি কেজিতে ১০ টাকা এবং লাল পাকড়ি আলু কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার পার আঁচলাই গ্রামের সবজি বিক্রেতা শাকিরুল ইসলাম জানান, শীতের আগাম সবজি ওঠতে শুরু করায় সরবরাহ বাড়ছে আর এই কারণে দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
বগুড়া সদরের ধাওয়া পাড়া গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, গত ১৫ দিন আগে ‘বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে, জমিতে কাঁদা পানি জমে যাওয়ায় সবজি সংগ্রহ করা যায়নি। এ কারণে সেই সময় বাজারে সবজির দাম বেড়েছিল। তবে এখন কমতির দিকে।
মহাস্থান হাটের আড়ৎদার মিম ট্রের্ডাসের স্বত্বাধিকারী খায়রুল ইসলাম খাজা বলেন, আগে বৃষ্টির কারণে পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত এবং মাঠ থেকে সবজি সংগ্রহে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় সরবরাহ কমে গিয়ে বাজারে সবজির দাম বেড়েছিল। কিন্তু এখন শীতের আগাম সবজি বাজারে আসায় সরবরাহ বেড়েছে এজন্য দাম কিছুটা কমতে শুরু কমেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে সব সবজির দাম অর্ধেকে নেমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।