‘আমি মরে গেলে আমার দুইটা এতিম শিশুর কী হবে। কে নেবে এদের দায়িত্ব। ওদের জন্য মাথা গোঁজার মতো একটা বসতঘরও করতে পারলাম না। দ্বিতীয় ছেলেটার জন্মের সময় ওর মা মারা গেছে। আমার শরীরের অবস্থাও ভালো নেই। কখন আমিও পরপারে চলে যাই।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. হেলিম।
মো. হালিম মিয়া (৪৫) নরসিংদীর বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের মৃত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দুই শিশু সন্তান মোমেন (৯) ও তামিম (৬)। ছোট ছেলে তামিমের জন্মের সময় তার স্ত্রী হেলেনা আক্তার মারা যান।
সরজমিনে দেখা যায়, একটি জরাজীর্ণ টিনের ছাউনি ঘরে মা হারা দুই শিশু সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন হালিম। ঘরে নেই কোনো আসবাবপত্র। ঘরের এক কোণে একটি চৌকি আর কাঁথা। ভাঙা চালের অংশ দিয়ে দিনের বেলায় সূর্যের আলো আর রাতে চাঁদের আলো দুটোই প্রবেশ করে ঘরে। ঝড় বৃষ্টিতে আশ্রয় নেন অন্যের ঘরে। শারীরিকভাবে অকর্মক্ষম হওয়ায় তিনি শঙ্কিত দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে।
প্রতিবেশী ছখিনা আক্তার বলেন, জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হালিম। দুইটা বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে আছে সে। কোনো কাজ করতে পারে না। অন্যের সহযোগিতায় চলে তার সংসার। বর্ষাকালে টুকটাক মাছ ধরে আর নৌকা চালিয়ে কোনো রকমে দিন পার করে। পানি কমে গেলে খেয়ে না খেয়ে থাকতে হয় তাদের।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, এ বিষয়টি আমাদের অবগত ছিল না। খোঁজ নিয়ে তার আশ্রয়ের সুব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।