চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বন বিভাগের পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা করেছে বনদস্যুরা।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাত ১০টার সময় জেলায় পটিয়া রেঞ্জের আওতাধীন বরগুনি বিট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার জামিজুরী গুচ্ছগ্রাম হাফছড়িকুল এলাকায় একদল বনদস্যু শুক্রবার রাতে বনের গাছ কেটে পাচার করছে। এমন সংবাদ পেয়ে বন বিভাগের পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হকের নেতৃত্বে ১০ জনের দল অভিযানে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর আক্রমণ করে বনদস্যুরা।
এ সময় পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক ও বনরক্ষী লোকমানের মাথায় ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয়। এ ছাড়া হামলাকারীদের দা ও লাঠির আঘাতে দুজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক ও একজন পিকআপ চালকও গুরুতর আহত হন।
পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোবাইল ফোনে হামলার বিষয়টি দোহাজারী রেঞ্জ অফিসে জানালে দোহাজারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম দ্রুত চন্দনাইশের অস্থায়ী আর্মি ক্যাম্প ও চন্দনাইশ থানায় জানালে তাদের উদ্ধার করা হয়।
চন্দনাইশ থানার ওসি ইমরান আল হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে চন্দনাইশে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর মেজর মেহেদীর সঙ্গে আলোচনা করে যৌথভাবে বন বিভাগের লোকদের উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় হামলার শিকার ব্যক্তিদের উদ্ধার করে আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বন বিভাগ দোহাজারী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বলেন, পটিয়া রেঞ্জের আওতাধীন বরগুনি বিটের দোহাজারী জামিজুরী গুচ্ছ গ্রাম হাফছড়িকুল এলাকায় গাছ কাটার সংবাদ পেয়ে শুক্রবার রাতে পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা এমদাদুল হক, বরগুনি বিট কর্মকর্তা রহমতসহ বনরক্ষীরা অভিযানে যান। টের পেয়ে গাছ চোরের দল বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় পটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা এমদাদুল হক ও বনরক্ষী লোকমানের মাথায় ধারালো দা দিয়ে কোপ দেয় তারা। এতে দুজন গুরুতর আহত হয়। হামলায় দুজন অটোরিকশাচালক ও একজন পিকআপচালকও গুরুতর আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, অন্যান্য বনরক্ষীরা পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। আহতদের পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রেঞ্জ কর্মকর্তা এমদাদ ও বনরক্ষী লোকমানকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত সিএনজি ও পিকআপচালকদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করছিল একদল মাটিখেকো সন্ত্রাসী। এমন খবরে বন বিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামানসহ দুজন মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় দুজনকে ডাম্প ট্রাক দিয়ে চাপা দেওয়া হয়। এতে সাজ্জাদুজ্জামান ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুরুতর আহত হন মোহাম্মদ আলী নামে আরকেজন।
সাজ্জাদুজ্জামান কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে। এ ঘটনায় আহত বনরক্ষী মোহাম্মদ আলী টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার বাসিন্দা।