28 C
Dhaka
Saturday, October 19, 2024

অন্তর্বর্তী সরকারকে ২৩ প্রস্তাব দিল এলডিপি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আলোচনা শেষে এলডিপি প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বলেছেন, আজ আমরা ২৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। বাংলাদেশের জনগণের জন্য যা প্রয়োজন প্রস্তাবে সেগুলো রয়েছে।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

অলি আহমেদ বলেন, আগামীতে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন, সুন্দর প্রশাসন চালানোর জন্য, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য, দ্রব্যমূল্যের জন্য মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমাদের প্রস্তাবগুলো দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সেদিন আমরা তাদের নিষিদ্ধ করেছিলাম। আজকে কী কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না? আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সবাইকে ব্যবহার করেছে। শেষ পর্যন্ত তারা জনতার চাপে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি।

আরো পড়ুন  নতুন ইস্যু নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি

এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে আমরা আজকে দ্বিতীয়বার এসেছি, আলোচনাও করেছি, লিখিত প্রস্তাব দিয়েছি। প্রথমবার যখন এসেছি তখন ১০৩টা প্রস্তাব দিয়েছি, আজকে আরও ২৩টা প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের দল কাউকে সুবিধা দেওয়ার জন্য বা কাউকে জেল থেকে মুক্তির জন্য কোনো প্রস্তাব দেয়নি। যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা বাংলাদেশের জনগণের যা প্রয়োজন সে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন, সুন্দর প্রশাসন, ন্যায়বিচার করার জন্য ও দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে দেশের মানুষ কষ্ট পাচ্ছে এ পয়েন্টগুলো আমরা দিয়েছি।

কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেন, আমরা পুরো জাতি জুলাই-আগস্টে একটা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গেলাম। এই যুদ্ধটা কার বিরুদ্ধে হলো, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কেন হলো? তারা অন্যায়ভাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে, প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে। দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে, দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে।

আরো পড়ুন  ডেঙ্গু প্রতিরোধে রাজধানীতে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ আব্দুস সালামের

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হতাহতদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে আমাদের বহু ছেলে-মেয়ে হতাহত হয়েছে। দেড় হাজারের উপরে আমাদের ছেলে-মেয়ে মারা গেছে। অনেকে বলে আরও বেশি হবে যার কোনো হিসাব নেই। অনেক লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে।

এ সময় নির্বাচন প্রসঙ্গে অলি আহমেদ বলেন, ঘরটা আগে বানাই। নির্বাচন করে করবেন কী, যদি সব চোর থেকে যায়। সংস্কারের পর নির্বাচন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে বলেছি। যা যা করতে হয় কঠোর হাতে দমন করতে হবে।

এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় এলডিপির প্রেসিডেন্ট অলি আহমদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় প্রবেশ করে।

আরো পড়ুন  অভিন্ন উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইসলামী ও সমমনা দলগুলো

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল আলম তালুকদার।

এলডিপি ছাড়াও এদিন আরও ছয়টি দল ও জোট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে বসেছেন। এর মধ্যে রয়েছে- গণফোরাম, লেবার পার্টি, ১২ দলীয় জোট, আন্দালিব রহমান পার্থর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও গণতান্ত্রিক মুক্তি কাউন্সিল। তবে বরাবরের মতো এবারও ডাকা হয়নি বিগত সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে (জাপা)।

তার আগে, গত ৫ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাকি দলগুলোর সঙ্গে আজ সংলাপ করবেন তিনি।

সবশেষ তৃতীয় দফার সংলাপ শেষ হওয়ার পর এবারের দফায় জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির আমন্ত্রণ পাওয়ার জোর গুঞ্জন উঠলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও সমর্থকদের প্রতিবাদের মুখে শেষ পর্যন্ত ডাকা হয়নি দলটিকে।

সর্বশেষ সংবাদ