অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের বহুল প্রত্যাশিত-প্রতীক্ষিত নির্বাচন দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকার গঠন করার রাস্তা দ্রুত সময়ের মধ্যে তৈরি করুন। দেশের মানুষ গত ১৫ বছর ধরে ভোট দিতে পারেনি। জনগণ তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল, তাদের নাগরিক অধিকার তারা ভোট দিতে চায়। ভোট দেওয়ার জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সেই ভোট দেওয়ার জন্য একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার এবং সেই বহুল প্রত্যাশিত ভোটের মাধ্যমে দেশে একটা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে, যেই সরকার জনগণের কথামতো চলবে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকার কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুলে পল্লবী রূপনগর থানা বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমিনুল হক বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার সরকারের দুঃশাসনের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে গত ১৭ বছর ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোটাধিকার ও মানুষের অধিকারের জন্য নিরলসভাবে আমরা নেতাকর্মীরা আন্দোলন করে আসছি। তারই সফলতা হিসেবে গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে বহু ছাত্র-জনতা ও বিএনপির নেতাকর্মীর রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ আবার নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। সেই স্বাধীন বাংলাদেশে আজকে আমরা সবাই স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি, আমরা স্বাধীন মতামত প্রকাশ করতে পারছি। আজকে আপনারা যদি সত্যি কথা বলেন, তাহলে দেশের কেউ আপনাদের কিছুই বলবে না। কিন্তু স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের আমলে গত ১৭ বছরে মসজিদের যে হুজুর, ঈমাম সাহেব আছেন- তাদেরও নির্ধারণ করে দেওয়া হতো- কী করবেন, কী করবেন না? কী দুর্ভাগ্য আমাদের এ জাতির!
তিনি বলেন, আওয়ামী স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তারা দেশে বিভিন্ন উন্নয়নের নামে নিজেদের পকেটের উন্নয়ন করেছে, নিজেদের পরিবারের উন্নয়ন করেছে। বিএনপি এ দেশের সাধারণ মানুষের দল, বিএনপি এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে। বিএনপি দেশের যে কোনো সংকটকালীন, দুর্যোগকালীন, করোনাকালীন এবং বন্যার সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সর্বদা। কিন্তু সে সময়ে স্বৈরাচার সরকার কোথায় ছিল? তারা মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তারা মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে এসি রুমে বসে ছিল।
আমরা দেশে আর কোনো স্বৈরাচারের স্থান দেখতে চাই না উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, কিন্তু আমাদের দলের ভিতরে, আমাদেরই দলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের কিছু লোক নব্য বিএনপি হয়ে বিএনপিতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করছে; এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
এই বিষয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে আমিনুল হক বলেন, যদি এ রকম কোনো কর্মকাণ্ডে আমাদের দলের কেউ জড়িত থাকেন এবং সেটা যদি প্রমাণিত হয়, আপনি যেই হোন না কেন- আপনি আর বিএনপির রাজনীতি করতে পারবেন না, আপনি আপনার রাজনীতি করার যোগ্যতা হারাবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ‘জিরো টলারেন্স’ দেখাব এখানে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রফেসর ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য এবিএমএ রাজ্জাক, মাহাবুব আলম মন্টু, মো. হানিফ মিয়া, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মহসিন সিদ্দিকী রনি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন, পল্লবী থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক কামাল হুসাইন খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ আলী গাজী, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, আনিছুর রহমান, মোতালেব হোসেন হাওলাদার, রূপনগর থানা বিএনপির আহ্বায়ক জহিরুল হক প্রমুখ নেতা।
এদিকে বিকেলে আমিনুল হক পল্লবী ৩নং ওয়ার্ডে যুবদলের সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন রাজনের আয়োজনে রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।