তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশটির অন্যতম নেতা ফেতুল্লা গুলেন মারা গেছেন। তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে ব্যর্থ হওয়া অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম ও একটি ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
তার মৃত্যুর খবর জানানো হারকুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে সোমবার বলা হয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
২০১৬ সালের ১৫ জুলাই তুরস্কে ভয়াবহ আক্রমণে ফেতুল্লা গুলেন নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এ আক্রমণে দেশটিতে ২৫২ জন নিহত হন। এ সময় আহত হন আরও অন্তত ২৭০০ জন।
গুলেন তুরস্ক এবং তার বাইরে হিজমেত নামের একটি শক্তিশালী ইসলামী আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তবে তাকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। যদিও এ অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।
তুরস্কের এ নেতা এরদোয়ানের এক সময়ের মিত্র ছিলেন। তবে পরবর্তীতে তা বাধাগ্রস্ত হয় এবং এরদোয়ান তাকে অভ্যুত্থানের জন্য দায়ী করেন। এ অভ্যুত্থানে সৈনারা যুদ্ধবিমান, ট্যাংক এবং হেলিকপ্টার নিয়ে ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে রাজপথে নেমেছিল। এতে প্রায় ২৫০ জন নিহত হন।
গুলেন ১৯৯৯ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্বঘোষিত নির্বাসনে ছিলেন। তিনি ১৯৪১ সালে তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ এরজুরামের একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একজন ইমাম ছিলেন। তিনি খুব অল্প বয়স থেকেই কুরআন পড়া আয়ত্ত করেছিলেন।
১৯৫৯ সালে গুলেন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর এডিরনে একটি মসজিদে ধর্মীয় প্রবক্তা নিযুক্ত হন এবং ১৯৬০-এর দশকে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইজমিরে একজন ধর্মীয় পণ্ডিত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। এ সময় তিনি সেখানে ডরমিটরি স্থাপন করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্মীয় প্রচারণা চালাতেন, যা পরবর্তীতে তুরস্কের সীমানা ছাড়িয়ে মধ্য এশিয়া, বলকান, আফ্রিকা এবং পশ্চিমের তুর্কি প্রজাতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়েছিল।
গুলেন এরদোয়ান এবং তার একে পার্টির ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। তবে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরের দিকে সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা দেখা দেয়।