বগুড়া গাবতলীর রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের একটি ভোটকেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার বাইরে দেওয়ার অভিযোগে প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রার্থীর এজেন্টসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ছাড়া সোনারায় ইউনিয়নের এক কেন্দ্রে জালভোট দেওয়ার ঘটনায় দুই সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে একই উপজেলার নারুয়ামালা কেন্দ্রের বাইরে ঘোড়া প্রতীকের দুই সমর্থক ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। প্রতিপক্ষের লোকজন ছুরিকাঘাত করেছেন বলে অভিযোগ।
বুধবার (৮ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের মাঝপাড়া কুসুম কলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রিসাইডিং অফিসারসহ দুজনকে আটক হয়। বেলা ১২টার দিকে সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে দুজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আটক দুজন হলেন- মাঝপাড়া কুসুম কলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার শাহজাহান আলী এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খান রবিনের (আনারস প্রতীক) এজেন্ট এমদাদুল হক এরশাদ।
এ ছাড়া অব্যাহতিপ্রাপ্ত দুজন হলেন- সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হাফিজার রহমান ও আব্দুল মোত্তালিব।
বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন কালবেলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রিসাইডিং অফিসার শাহজাহান আলী ৯০০ ব্যালট পেপার স্বাক্ষর ও সিলসহ এজেন্ট এরশাদের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাইরে পাঠিয়ে দেন। এরপর বিভিন্ন ভোটারের মাধ্যমে ৩০০ ব্যালট বাক্সে ফেলে। পরে এরশাদকে আটক করে ৬০০ ব্যালট উদ্ধার করা হয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে প্রিসাইডিং অফিসারের কক্ষ থেকে ৯০০ ব্যালট পেপার উদ্ধার হয়েছে। এ সময় শাহজাহান আলীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদের দুজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুটি বুথে জালভোট দেওয়ার সময় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আফসানা রিমার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় দুই বুথের দায়িত্বে থাকা দুই প্রিসাইডিং অফিসারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
সোনারায় উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এটিএম আমিনুল ইসলাম জানান, ভোটগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগে হাফিজুর ও তরিকুল নামে দুই সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় নির্বাচন কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।
তবে দুই সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার দাবি করে বলেন, অন্তত ১৫ জন লোক গিয়ে তাদের কাছ থেকে ব্যালট বই ছিনিয়ে নেয়। বিষয়টি নিয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জানানো হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
এ দিকে নারুয়ামালা ইউনিয়নের নারুয়ামালা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে লুৎফর রহমান ও রফিকুল ইসলাম নামের দুজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুজনই গাবতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীক) অরুণ কান্তি রায় সিটনের সমর্থক।
জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান কালবেলাকে বলেন, এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।