29 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

৮ মাসে পবিত্র কোরআন হাতে লিখেছে স্কুলছাত্রী

দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলায় ৮ মাসে পুরো কোরআন শরিফ নিজ হাতে লিখেছে সোমা আক্তার নামে এক স্কুলছাত্রী। সোমা আক্তার উপজেলার মাঝা পাড়া গ্রামের আমিনুল ইসলামের মেয়ে। সে চিরিরবন্দর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয়রা জানায়, বর্তমান সময়ের ছেলে-মেয়েদের থেকে একটু আলাদা সোমা আক্তার। যে বয়সে মেয়েরা মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত, সেই বয়সে নিজ হাতে কোরআন লিখে ব্যস্ত সময় পর করে সে। এমনকি কোনো মাদরাসা বা কোনো হুজুরের কাছে এ বিষয়ে প্রাইভেটও পড়েনি সোমা আক্তার। মাত্র ৮ মাসে নির্ভুলভাবে পুরো কোরআন হাতে লিখেছে সে। তার চোখ জুড়ানো হাতের লেখায় পবিত্র কোরআন লিখে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সে।

সোমা আক্তারের বড় বোন সুমি আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছোট বোন ছোট বেলো থেকে অনেক মেধাবী। সে পড়ালেখার পশাপাশি সুন্দর হাতের লেখার চর্চা ও বিভিন্ন ছবি আঁকতে পছন্দ করত। সে আরবি ক্যালিগ্রাফি আর্ট করত পারে। নিজে নিজে আমপাড়া দেখে আরবি লেখা শিখেছে। এরপর আট মাসে পুরো কোরআন হাতে লিখে ফেলছে।

আরো পড়ুন  রিকশা চালককে কুকুরের সঙ্গে বেঁধে রাখার ঘটনায় ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার

সোমা আক্তারের মা আছমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়ে এখন হাইস্কুলে আছে। তাকে মাদরাসা বা কোনো হুজুরের কাছে পড়াইনি। সে নিজের চেষ্টায় মাত্র ৮ মাসে পুরো কোরআন শরিফ লিখেছে। মেয়ের এমন দৃষ্টিনন্দন কাজে আমি মা হিসেবে খুশি।

স্থানীয় মামুদপুর রসুলপুর হামীদিয়া সালাফিয়া ইয়াতিম খানা মাদরাসা হাফেজ আব্দুল হাকিম সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটা কেউ বিশ্বাস করতে চাইবে না যে জীবনে মাদরাসা বা কোনো হুজুরের কাছে আরবি না পড়েও একজন স্কুল শিক্ষার্থী মাত্র ৮ মাসে পুরো কোরআন শরিফ হাতে লিখে শেষ করছে। সোমার হাতের লেখা পুরো কোরআন শরিফ আমি দেখেছি। কোথাও কোনো ভুল নেই। শুধু দুই এক জায়গায় একটু সমস্যা ছিল সেগুলো দেখিয়ে দিয়েছিলাম সোমা সেগুলো ঠিক করে নিয়েছে। সে মোট ৬টি কপি তৈরি করেছে সেগুলোতে কোনো ভুল নেই। সোমার হাতের লেখা কোরআন দেখলে মনে হবে না যে এটা হাতে লেখা।

আরো পড়ুন  ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা ও আহত শিশুর পরিচয় মিলেছে

সোমা আক্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি প্রথমে আরবি ক্যালিগ্রাফি আর্ট করার চেষ্টা করতাম সেটা দেখে আমার এক ভাই বলেছে তোর হাতের লেখা তো অনেক সুন্দর। তুই হাতে কোরআন শরিফ লিখতে পারবি চেষ্টা করলে। ভাইয়ের কথা ধরেই চেষ্টা শুরু করি। এরপর দীর্ঘ ৮ মাস চেষ্টায় সফলভাবে কোরআন লিখতে পেরেছি। আমি কোনো মাদরাসা বা কোনো শিক্ষকের কাছে আররি লেখা শিখিনি। কোরআন শরিফ দেখে দখে নিজে নিজে চেষ্টা করে শিখেছি। কারণ আমরা বাবা একজন দিনমুজুর। আমাদের সেরকম কোনো সামর্থ্য নেই আলাদা ভাবে হুজুরের কাছে গিয়ে প্রাইভেট পড়ানোর। আমার হাতে লেখা কোরআন দেখে এক সৌদি প্রবাসী ভাই ৬টি কোরআন শরিফ অর্ডার করেছেন। ইতোমধ্যে আমি সেগুলো তৈরি করে ফেলেছি। আমি আরো কিছু হাতে লিখা কোরআন শরিফ রেডি করছি মসজিদ, মাদরাসা ও ইয়াতিম খানায় দান করব। কেউ যদি আমার হতে লিখা কোরআন শরিফ নিতে চায় আমি লিখে দিতে পারব।

আরো পড়ুন  ছেলের সঙ্গে অভিমান, গলায় ফাঁস দিয়ে মায়ের আত্মহত্যা
সর্বশেষ সংবাদ