সরকারের নেওয়া কর্মসূচিগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশে কেউ গরিব থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (১০ মে) টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দাঁরিয়ারকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশবাসীকে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল করতে বহুমাত্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। আমরা বহুমাত্রিক কর্মসূচি হাতে নিয়ে প্রত্যেক মানুষকে আর্থিকভাবে সচ্ছল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। সরকারের নেওয়া কর্মসূচিগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশে কেউ গরিব থাকবে না।
তিনি ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিশ্চিত করতে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে সারা দেশে সমবায় সমিতি গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ জন্য প্রতিটি এলাকায় সমবায় সমিতি গঠন করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে আওয়ামী লীগ নেতাদের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল করতে সারা দেশে সমবায় গঠনের ধারণা ছড়িয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন তিনি।
শেখ হাসিনার দেওয়া ৯ দশমিক শূন্য ৫ একর জমিতে গড়ে ওঠে দাঁরিয়াকুল সমবায় সমিতি। দাঁরিয়াকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির উপদেষ্টা শেখ হাসিনা সমবায় পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি সমবায়ের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সমবায় ব্যবস্থায় জমির মালিকানা পরিবর্তন হবে না এবং ফসলকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে। প্রতিটি ফসলের একটি অংশ মালিক ও কৃষকরা এবং সমবায়ের কাছে একটি অংশ যায়। তিনি অন্যের ওপর নির্ভরতা কমাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সমবায়ের ধারণা থেকেই ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ ও ‘পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক’ গঠনের পরিকল্পনা করা হয়। আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক খুলেছি যাতে যুবকরা বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারে। চাকরির পেছনে না ছুটে, নিজেরা উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা সবার জন্য সার্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছি। এতে কেউ যদি ৫০০ টাকা জমা দেয় তাহলে তাকে সরকারের পক্ষ থেকে আরও ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। আমরা বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সারা দেশে সমবায় ছড়িয়ে দিতে হবে, খাদ্যের নিশ্চয়তা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। সরকারে আসার পর থেকেই প্রচেষ্টা ছিল দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না। বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে যৌথভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চাই বলেও জানান তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন আরেকটি আধুনিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। আজকের শিশু-কিশোর যুবক তারাই হবে স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে দেশকে বাঁচাতে প্রত্যেককে দুই-তিনটা করে গাছ লাগানোর আহ্বানও জানান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, সকাল ৭টা ১০ মিনিটে গণভবন থেকে সড়কপথে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ৯টার পর টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছেন তিনি। সেখানে পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।