পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক না হলেও এক দিনমজুরের নামে ছয় মাসের বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুরুঙ্গামারী জোনাল অফিস। শুধু তাই নয়, নোটিশ পাওয়ার পর অতিদ্রুত বিল পরিশোধ না করলে ওই দিনমজুরের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া বকেয়া না থাকার পরও একই এলাকার কয়েকজনকে বকেয়া পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের এমনকাণ্ডে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী দিনমজুরসহ নোটিশপ্রাপ্ত একাধিক ব্যক্তি।
সম্প্রতি গ্রাহককে দেওয়া নোটিশের কপিতে বলা হয়েছে, রেকর্ডপত্র অনুযায়ী ০৯/১০/২০২১ তারিখে বকেয়ার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় অত্র নোটিশ প্রাপ্তির পর অতিসত্বর বকেয়া পরিশোধ ও পুনঃসংযোগ গ্রহণ করার জন্য বলা হলো। অন্যথায় উক্ত বকেয়া আদায়ের জন্য সরকারের বিদ্যুৎ আইন ও পিডিআর অ্যাক্ট অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুরুঙ্গামারী থানার ওসিকে মামলা করার জন্য এ নোটিশের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের বাসিন্দা হবির আলী পেশায় দিনমজুর। বাড়িতে তার নামে কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ বা মিটার নেই। বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও হবির আলীর নামে ৬ মাসের বকেয়া বাবদ ১ হাজার ৯৫১ টাকা দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ ভুরুঙ্গামারী জোনাল অফিস।
হবির আলী কালবেলাকে বলেন, আমার নামে কোনো মিটার নাই। তবুও বকেয়া বিল দেখিয়ে তা পরিশোধের নোটিশ দিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। আমি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়েছি কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।
এ ছাড়া আমিনুল ইসলাম, ফয়েজউদ্দিন, শিপন মিয়া, আমিনুর রহমান, রজব আলী ও আজাদুল হকের নামে বকেয়া পরিশোধের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অথচ তাদের নামে কোনো বকেয়া নেই বলে জানান তারা।
নোটিশ পৌঁছে দেওয়া মিটার রিডার রায়হান মিয়া বলেন, অফিস থেকে ওই নোটিশগুলো সরবরাহ করে গ্রাহক বরাবর পৌঁছে দিতে বলা হয়েছে। আমি শুধু পৌঁছে দিয়েছি। যাদের নামে সংযোগ ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে তাদেরকে অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছি।
পল্লী বিদ্যুতের ভুরুঙ্গামারী জোনাল অফিসের ডিজিএম মিজানুর রহমান বলেন, ওই ব্যক্তিরা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি বিষয়টি বিলিং সহকারীকে যাচাই করতে বলেছি। নোটিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের নামে যদি সংযোগ না থেকে থাকে তাহলে এমন নোটিশ জারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।