‘হ্যালো, হাউ আর ইউ’ বলে কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে অভ্যর্থনা জানান শিলাস্তি রহমান। তার এ কথা জবাবে এমপি আনার বলেন, ‘আই এম ফাইন’।
এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুনের উদ্দেশে অপহরণের মামলায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শিলাস্তি রহমান। জবানবন্দিতে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার (৩ জুন) রিমান্ডে থাকা আসামি শিলাস্তি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ডের পর শিলাস্তি রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জবানবন্দিতে শিলাস্তি জানান, এমপি আনার কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে ঢোকার পর তাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে শিলাস্তি বলেন, ‘হ্যালো, হাউ আর ইউ’। জবাবে এমপি আনার বলেন, ‘আই এম ফাইন’। আনারকে অভ্যর্থনার পর শিলাস্তি ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যান। রাতে যখন ফ্ল্যাটে ফেরেন তখন প্রচুর ব্লিচিং পাউডারের গন্ধ পেয়েছেন বলে তিনি জবানবন্দিতে জানান।
শিলাস্তি জবানবন্দিতে আরও জানান, রাতে ফ্ল্যাটে ফেরার পর শিলাস্তি ফ্ল্যাটে থাকা অন্যদের জিজ্ঞেস করেন, এমপি আনার কোথায়। তখন ফ্ল্যাটে থাকা অন্যরা তাকে বলে এমপি আনার চলে গেছেন। এরপর রাতে টয়লেটে ফ্ল্যাশ করার অনেক শব্দ পেয়েছেন তিনি।
জবানবন্দিতে শিলাস্তি উল্লেখ করেন, হত্যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। এ ছাড়া কীভাবে হত্যার মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহিনের সঙ্গে পরিচয়, কেন শাহিনের সঙ্গে কলকাতায় গেছেন, কীভাবে কার সঙ্গে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসেছেন– এর সবই জবানবন্দিতে তুলে ধরেন তিনি।
শিলাস্তির দেওয়া জবানবন্দির বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, তিনি যে জবানবন্দি দিয়েছেন তা মামলার তদন্তের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ডিবিকে জিজ্ঞাসাবাদে শিলাস্তি যে তথ্য দিয়েছিলেন জবানবন্দিতে সেই একই তথ্য দিয়েছেন। শিলাস্তির জবানবন্দিতে প্রমাণ হয় সঞ্জীবা গার্ডেনে কী হয়েছিল।
এদিকে ডিবি সূত্রে জানা যায়, এমপি আনার খুনের ঘটনায় আরও দুইজন জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য পেয়েছে ডিবি। তাদের একজন তাজ মোহাম্মদ খান ওরফে হাজী, অন্যজন মো. জামাল হোসেন। দুজনেরই বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে। আনার খুনের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত আক্তারুজ্জামান শাহীনের বাড়িও একই এলাকায়।
জানা যায়, তাজ ও জামাল আক্তারুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন যে ১০ আসামির ব্যাংক হিসাবের তথ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিবি, সেখানে তাদের নাম রয়েছে।