ঝিনাইদহের মহেশপুরে স্ত্রীকে ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে শাহাজাহান ফকিরকে গলা কেটে হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার প্রধান আসামি রাজু।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি। আসামি রাজু যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের জিয়ারুল ইসলামের ছেলে।
জবানবন্দিতে রাজু বলেন, আমি পেশায় একজন দিনমজুর। আমার ৩ বছরের একটা কন্যাসন্তান রয়েছে। বাবার পীর বাবা হওয়ার সুবাদে শাহাজাহান ফকিরকে আমি দাদু বলে ডাকি। ভালো সম্পর্ক থাকায় মহেশপুরের বামনগাছা গ্রামে তার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করতাম। গত ৮ মে স্ত্রীকে নিয়ে শাহাজাহান ফকিরের বাড়িতে বেড়াতে যাই। সেখানে ২-৩ দিন থাকার পর চলে আসতে চাইলে দাদু বলেন, দাদি অসুস্থ তোর বউকে কয়েক দিনের জন্য রেখে যা আমার রান্না করে দেবে।
তার কথা অনুযায়ী আমিও স্ত্রী সন্তানকে রেখে ঢাকায় চলে আসি। এরপর গত ১৫ মে রাত ১০টার দিকে আমার স্ত্রীর ফোনে কল করি কিন্তু সে কল ধরেনি। এরপর দাদুকে কল করি কিন্তু দাদুও কল ধরেননি। রাত প্রায় ৩টার দিকে পুনরায় আমার স্ত্রীর ফোনে কল করলে সে কাঁদতে কাঁদতে জানায়, দাদু তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে।
পরের দিন সকালে আমার স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে। ঢাকা থেকে ফিরে আমি মামলা করতে চাইলে স্ত্রী নিষেধ করে। সে বলে, মামলা করলে আমাদেরই মানসম্মান যাবে। পর ২৮ মে আমার চাচাতো ভাই রাসেলকে সঙ্গে নিয়ে দাদুর বাড়িতে যাই। যদিও রাসেল এ ব্যাপারে কিছুই জানত না। চাচাতো ভাইয়ের ডিউটি থাকায় সে ৯টার দিকে বাড়িতে চলে আসে। পরে রাত ১২টার দিকে আমি দাদুকে জিজ্ঞাসা করি তুমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে এমনটা করেছ কেন? তখন দাদু বলে কোনো প্রমাণ নাই, তুই আমার কিছুই করতে পারবি না। এরপর রাত আড়াইটার দিকে ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে আমি তার গলায় পোঁচ মেরে সেখান থেকে পালিয়ে যাই।
মহেশপুর থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান জানান, তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাজুকে বুধবার (৫ মে) বিকেলে উপজেলার খালিশপুর বাজার থেকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াদ হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি রাজু শাহাজাহান ফকিরকে গলা কেটে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।