27 C
Dhaka
Wednesday, July 3, 2024

মাথায় গুলি করে শিক্ষার্থী হত্যাকারী কে এই ফারাবী?

হাসান আল ফারাবী জয়। একজন চিহ্নিত খুনি ও ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা। তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে সবার সামনে আয়াশ রহমান ইজাজ নামে এক শিক্ষার্থীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করেছেন। তার এহেন ভয়াবহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে হতবাক সবাই।

মানুষ হত্যা করে সবার সামনে থেকে নির্বিঘ্নে পালিয়ে গেছেন এই খুনি। অথচ পুলিশ তাকে খুঁজেই পাচ্ছে না! এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

কে এই ফারাবী?

জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামের ছেলে ফারাবী বাবা-মায়ের চাকরির সুবাধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়ায় ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন।

অস্ত্রধারী ফারাবী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে বোটানি বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। তার বাবা রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর। মা রোকেয়া বেগমও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। বোন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান বর্ষের শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন  কোটা নিয়ে বিতর্ক থামছে না কেন?

সহপাঠীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ছাত্রজীবনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল এবং সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভনের হাত ধরেই রাজনীতিতে ঢোকেন তিনি। যে কোনো মিছিল, মিটিং আন্দোলন সংগ্রামে হাসান আল ফারাবী জয় সক্রিয় ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার কারণেই পেয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির পদ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কলেজপাড়া এলাকার একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ফারাবী। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজিসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। ক্রমশ ভয়ংকর হয়ে ওঠা হাসান আল আল ফারাবীর ভয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসীও। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় ফারাবীর বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি মামলা।

এদিকে বুধবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম প্রান্ত স্বাক্ষরিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থি এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে হাসান আল ফারাবী জয়কে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরো পড়ুন  সাবেক আইজিপি বেনজীরের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন জানান, বুধবার ঘটে যাওয়া ঘটনায় ইজাজের বাবা মো. আমিনুর রহমান বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মামলা করেছেন। মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন ভূঁইয়া খোকাকে প্রধান আসামি এবং অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ নেতা হাসান আল ফারাবী জয়কে দ্বিতীয় আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ঘটনার পর থেকে আসামিরা গা ঢাকা দেয়ায় তাদের এখন পর্যন্ত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। তবে প্রধান আসামিসহ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারে জেলাসহ জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন  পতেঙ্গায় বিমান বিধ্বস্ত স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ নিহত, তদন্ত কমিটি গঠন

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, বুধবার (৫ জুন) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ চলাকালে একটি মিশনারী স্কুলের ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জালাল হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে আশরাফুর রহমান ইজাজের বাদানুবাদ হয়। এক পর্যায়ে ইরাজকে ভোটারের লাইন থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন জালাল। এনিয়ে আশরাফুল রহমান ইজাজ প্রতিবাদ করেন। এসময় খোকাসহ তার সঙ্গে থাকা সহযোগীরা ইজাজকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

সর্বশেষ সংবাদ