বাবার সঙ্গে এ বাড়ি থেকে- ওই বাড়িতে ছুটছেন, নিজের বাড়িঘরে যেতে পারছেন না,এ যেন নিজ এলাকায় এখন পরবাস থাকছেন বাবা আব্দুল মজিদ ও তার মেয়ে সুফিয়া খাতুন। সাদা বস্তায় হাঁড়ি-পাতিল, তালা-বাসন ও বিছানাপত্র নিয়ে আজ এক বাড়িতে, কাল অন্য বাড়িতে রাত্রিযাপন করছেন। মাথায় এ পুটলা নিয়ে নিত্যদিন ছুটতে হচ্ছে তাদের। এ ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়নের লংকাখোলা গ্রামে।
অমানবিক নির্যাতন ও বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ায় বর্ষার দিনে কষ্টের দিনলিপি সোমবার (১০ জুন) সাংবাদিকদের নিকট তুলে ধরেন আব্দুল মজিদ ও তার মেয়ে সুফিয়া খাতুন। আব্দুল মজিদ জানায়, তাদের দু’জনের হাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে। বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করেছি। জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচারের জন্য জেলা পুলিশ সুপারের নিকট অভিযোগও দিয়েছি। ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছি। কেউ আমাদেরকে বাড়িতে থাকার ব্যবস্থাটুকু করে দেয়নি।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমার ছেলে সন্তান নেই, একটি মেয়ে নিয়ে আছি। বাড়িতে গেলেই ওরা বাপ-বেটিকে একসঙ্গে পিটায়। আমার জমি দখল করতে তাদের নিকট জমি বিক্রি করেছি, এমন ভুয়া অভিযোগ সাজিয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ করে আমাদেরকে হয়রানিও করা হচ্ছে। এক মেয়েকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবন কাটাচ্ছি।
জানা যায়, উপজেলার লংক্ষাখোলা মৌজায় আব্দুল মজিদের ২৩ শতাংশ জমিতে আমগাছ, জামগাছ, কাঁঠাল, লিচু, জলপাই – সুপারীগাছ ও ঝাঁশঝাড় রোপন করিয়া জীবিকা নির্বাহ করেন। গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর মো. আজিজুল হক (৪০), মো. আশিক (২৫), মোছা. হাফসা (২৬), মো. কবির (৩০), মো. কাসেম (৪০), মোছা. ঝরোনা (৩৪), মো. দুলাল মিয়া (৩৫), মো. সুমন (২৫), মো. খায়রুল (৩৫), মো. রফিকুল (৩২) গং হামলা চালিয়ে বাবা-মেয়েকে বাড়িঘর ও ফসলি জমি থেকে তাড়িয়ে দেন। এ সময় ঘরের প্রায় ১লক্ষ ২৫ হাজার টাকার জিনিসপত্র ভাঙচুর ও বাড়িঘর ভেঙে প্রায় ১লক্ষ টাকা ক্ষতি করেন।
এ ঘটনা তিনি বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ প্রসঙ্গে লংক্ষাখোলা গ্রামের আব্দুল আজিজের পুত্র মো. আবুল কাসেম জানান, বাড়ি থেকে ওদেরকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ মিথ্যা। ওরাই লাঠি-সোটা নিয়ে আমাদেরকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দেয়। আমি আব্দুল মজিদের নিকট থেকে জমি ক্রয় করেছি, তবে রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয়নি। এখন রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছে না।