আধুনিক যুগে নিজেকে সুন্দর প্রমাণ করতে অনেকেই কৃত্রিমতার ওপরেই ভরসা রেখে থাকেন। আর সেই সুযোগই নিলেন এক চিকিৎসক। এক রোগীর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
মূলত নারী রোগীকে বিনামূল্যে বোটক্স দেওয়ার বিনিময়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেন ওই চিকিৎসক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চিকিৎসার বিনিময়ে রোগীকে শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য করার বিষয়টি সামনে আসে।
গত এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, লন্ডনের এক টিভি কসমেটিক চিকিৎসক তার ক্লিনিকে যৌনতার বিনিময়ে একজন রোগীকে বিনামূল্যে বোটক্স দিয়েছেন বলে মেডিকেল ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে।
বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের নাম ড. টিজিয়ন এশো। তার অনেক সেলিব্রিটি ক্লায়েন্ট রয়েছেন। তিনি আইটিভির দিস মর্নিং, বিবিসির মর্নিং লাইভ এবং ই৪’স বডি ফিক্সারস-এ নিয়মিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকতেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ওই চিকিৎসকের কাছে ২০১৯ সালে বোটক্স ট্রিটমেন্ট করাতে গিয়েছিলেন এক নারী। সেখানেই ওই চিকিৎসক তাকে বিনামূল্যে বোটক্স চিকিৎসা করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আর এর বদলে তাকে শারীরিক সম্পর্ক করতে হবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এভাবে একবার নয়, একাধিকবার রোগীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন ওই চিকিৎসক। তিনি ঠোটে কসমেটিক্স ট্রিটমেন্ট করাতে গিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করেছিলেন ওই চিকিৎসক। তাদের মধ্যে অশ্লীল মেসেজ আদান-প্রদানের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
যদিও ৪২ বছর বয়সী ওই চিকিৎসকের দাবি, ওই নারীর সঙ্গে তার মানসিক সম্পর্ক ছিল, কিন্তু কোনও দিনই শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। তবে ওই নারীকে আপত্তিকর ম্যাসেজ দেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
কী কথা হয়েছিল তাদের মধ্যে? ইনস্টাগ্রামের চ্যাটে দেখা গেছে, কখনও চিকিৎসক লিখেছেন, এক রাতের জন্য তাকে পেয়ে তিনি ধন্য। এভাবে প্রতি রাত পেতে চান। বোটক্সের বিনিময়ে এই শারীরিক সম্পর্ক বলে চিকিৎসকদের নীতি বা এথিক্স কোড ভাঙছেন বলেও চ্যাটে স্বীকার করে নেন ওই চিকিৎসক।
মেডিকেল ট্রাইব্যুনাল প্র্যাকটিশনার সার্ভিস (এমপিটিএস) প্যানেলের রায় অনুযায়ী, ওই চিকিৎসক রোগীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। এমনকী ২০২১ সালে নিজের নিউক্যাসল ক্লিনিকে শারীরিক সম্পর্কের পর ওই নারীকে বিনামূল্যে বোটক্স ট্রিটমেন্ট দিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত এই চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তে ‘হতাশ’। তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছেন, রোগীর সঙ্গে তার কোনও শারীরিক সম্পর্ক ছিল না।