মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে জান্তা বাহিনীর আরও ১০টি ঘাঁটি দখলে নেয়ার দাবি করেছে দেশটির জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মাত্র দুই সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে এসব ঘাঁটি নিজেদের দখলে নিয়েছে তারা। এই সময় তাদের হাতে প্রায় ২০০ জান্তা সেনা প্রাণ হারিয়েছে। খবর ইরাবতীর।
গত মাসে উত্তর মংডু দখল করার পর টাউনশিপের দক্ষিণে জান্তা ও সীমান্ত রক্ষী পুলিশের ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা করে আরাকান আর্মি। মূলত বুথিডাং শহর দখলের পর মে মাসের শেষের দিকে মংডু শহরে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করে তারা। দুটি শহরই বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে অবস্থিত। ওই এলাকায় বসবাসকারীরা মূলত রোহিঙ্গা। আর গত দুই সপ্তাহে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি যেসব সামরিক ঘাঁটি দখলে নিয়েছে তার প্রায় সব কটিই বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন থেকে বেশ কাছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) এক ঘোষণায় আরাকান আর্মি বলেছে, এই সপ্তাহে তারা চারটি জান্তা ঘাঁটি দখল করেছে। যার মধ্যে মাওয়ায়াদ্দি কৌশলগত কমান্ড বেস এবং না খাউং টো ঘাঁটি রয়েছে। এই সময় মাওয়ায়াদ্দির কৌশলগত কমান্ডার কর্নেল তাইজার হতে এবং প্রায় ২০০ জান্তা সেনাকে হত্যা করা হয়।
গত বুধবার (১২ জুন) রাতে হামলা চালানোর পর টাউনশিপের প্রবেশপথে অবস্থিত সুপরিচিত জান্তা ঘাঁটি আহ লেল থান কিয়াও দখল করে। হামলার আগে এই ঘাঁটিতে প্রায় ২০০ সেনা এবং সীমান্তরক্ষী পুলিশ ছিল। তাদের মধ্যে অনেকে অন্যান্য ঘাঁটিতে আশ্রয়গ্রহণ করেছে।
এ ছাড়া চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আরাকান আর্মি ছয়টি জান্তা ঘাঁটি দখল করে। এদের মধ্যে মংডু-আগনুমাউ রোডের মিন্ট লুট গ্রামের কাছে বর্ডার গার্ড পুলিশের ৯ নম্বর ব্যাটালিয়ন এবং ইন দিন গ্রামে বর্ডার গার্ড পুলিশের ৬ নম্বর ব্যাটালিয়ন সদরদপ্তর রয়েছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বাংলাদেশি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মংডু থেকে অন্তত ২৮ জন জান্তা সেনা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এই ঘটনার কয়েক দিন আগেই বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়া ১৩০ জনের বেশি জান্তা সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে রাখাইনে জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা করে আসছে আরাকান আর্মি। ইতিমধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বেশ কিছু অঞ্চল জান্তার হাত থেকে নিজেদের দখলে নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। ফলে বিরোধীদের চাপে জর্জরিত জান্তা সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে চলেছে আরাকান আর্মি।
আরাকান আর্মি বলছে, তারা মংডু, অ্যান ও থান্ডওয়ে শহরে জান্তার লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে যাবে। অ্যান কেন্দ্রীয় রাখাইনে এবং থান্ডওয়ে রাজ্যের দক্ষিণে অবস্থিত।