চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাহজালাল হলের জানালার গ্রিল চুরি করার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ জুয়েল ছাত্র রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন। শুক্রবার (২১ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা জানান।
নিজের ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া স্ট্যাটাসে জুয়েল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। এই রাজনীতির জন্য কতবেলা খেয়ে না খেয়ে পড়েছিলাম, তা কাউকে বলে কয়ে বুঝানোর সাধ্য কারোরই নেই। প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অসংখ্যবার ভুল করেছি। ভুল করেছি নিজেকে সর্বেসর্বা ভেবে, নিজের অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ার নিয়ে ছেলেখেলা করে। আমার দুরবস্থা দেখে একজন স্রষ্টার বিচার বলে স্ট্যাটাস দিল। অন্যদের দেখলাম বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টবক্সে ঠাট্টা করতেসে। এটাই জীবন। আমার মেনে নিতে হবে।’
নিজের ভুল স্বীকার করে জুয়েল বলেন, ‘ভুল থেকে শিখতে হবে। আমার জন্য যাদের মানসম্মানে আঘাত এসেছে আমি সকলের কাছে নম্রতার সাথে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমাকে আপনারা ক্ষমা করে দেবেন। আমি লজ্জিত। কোন মুখে আমি আবার আপনাদের সম্মুখ হব আমার জানা নেই। আমি এই মুহূর্ত থেকে সকল প্রকার রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন থেকে সজ্ঞানে এবং স্বেচ্ছায় বিদায় নিলাম।’
এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদ জুয়েলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। জুয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্সুরেন্স বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক এবং উপগ্রুপ সিক্সটি নাইনের অনুসারী বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, জানালার গ্রিল পরিত্যক্ত হোক আর যাই হোক, একজন শিক্ষার্থী কখনোই বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ বাইরে নিয়ে যেতে পারে না। ছেলেটি ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে জড়িত হবে না বলে অঙ্গীকার করেছে। আমরা মুচলেকা নিয়ে ছেলেটিকে ছেড়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শাহজালাল হলের জানালার গ্রিল চুরির পর বিক্রির উদ্দেশ্যে বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে মোহাম্মদ জুয়েলকে আটক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা। পরে মুচলেকা দিয়ে এমন কাজ ভবিষ্যতে না করার শর্তে তাকে ছেড়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি। এ ঘটনায় রাজনৈতিক সহকর্মীদের পাশে না পেয়ে উল্টো তাদের ঠাট্টা-তামাশার শিকার হয়েছেন বলে জানান জুয়েল।