দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতির আলোচনা গতি পেয়েছে। হামাস নতুন করে যুদ্ধবিরতির আরেকটি প্রস্তাব দেয়। আগের প্রস্তাবে তারা যেসব দাবি জানিয়েছিল সেখানে তারা কিছু ছাড় দিয়েছে বলে জানা গেছে। এরপরই দখলদার ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির চুক্তির আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) এই আলোচনায় গতি পরিলক্ষিত হয়েছে।
হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে গতকাল ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ওই টেলি আলাপে নেতানিয়াহু বাইডেনকে জানান তিনি যুদ্ধবিরতির আলোচনা পুনরায় শুরু করতে একটি প্রতিনিধি দলকে পাঠাবেন। এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই আলোচনায় নেতৃত্ব দেবেন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ডেভিড বার্নেয়া।
ইসরায়েলি প্রতিনিধি দলের একটি সূত্র রয়টার্সকে নাম গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছানোর একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এর আগে যুদ্ধবিরতির যত আলোচনা হয়েছে, তার সবগুলোতেই ইসরায়েল জানিয়েছে হামাস যেসব দাবি-দাওয়া পেশ করছে সেগুলো তাদের মানা সম্ভব নয়। কিন্তু এবারই প্রথমবারের মতো তারা বলেছে, যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
ফিলিস্তিনি একটি সূত্র জানিয়েছে, হামাস নতুন যে প্রস্তাব দিয়েছে এটি যদি ইসরায়েল মানে তাহলে একটি কাঠামোগত চুক্তি হতে পারে।
তিনি জানিয়েছেন, হামাস এখন আর চুক্তির শুরুতেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছে না। এর বদলে যুদ্ধবিরতির প্রথম ছয় সপ্তাহে ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি’-তে পৌঁছাতে যে আলোচনার শর্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল দিয়েছে সেটি তারা মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেছেন, যদি যুদ্ধবিরতির প্রথম ছয় সপ্তাহের মধ্যে দুই পক্ষ স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে না পৌঁছাতে পারে তাহলে এজন্য আরও সময় নেওয়া হবে।
আর এ বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তি হতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে খুব সম্ভবত চিন্তা-ভাবনা ও আলোচনা করা হচ্ছে। তবে হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় শান্তিরক্ষী মোতায়েনের বিষয়টি তারা মেনে নেবে না। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, গাজার নিয়ন্ত্রণ শুধুমাত্র গাজার বাসিন্দাদের কাছেই থাকবে।
হামাসের আরেক মিত্র সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার রেসিসটেন্স কমিটি (পিআরসি) জানিয়েছে, গাজায় যদি কোনো শান্তিরক্ষী পাঠানো হয় তাহলে তারা তাদের দখলদার হিসেবে বিবেচনা করবে।
সম্ভাব্য এ যুদ্ধবিরতি নিয়ে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছে হামাস। হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তারাও তাদের হামলা বন্ধ করে দেবে।
তবে দখলদার ইসরায়েলের উগ্র ডানপন্থিরা এই যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনাটি বানচাল করে দিতে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।