সংকটকালে দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সোমবাবার (৫ আগস্ট ) বিকেল চারটার দিকে জাতির উদ্দেশ্য দেয়া এক ভাষণে এ কথা জানান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
জনগণের উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখেন। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখেন, একসঙ্গে কাজ করি। দয়া করে সাহায্য করেন। মারামারি সংঘাত করে আর কিছু পাব না। সংঘাত থেকে বিরত হোন। সবাই মিলে সুন্দর দেশ গড়েছি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল চলছে। একটি আন্তবর্তী সরকার গঠন করা হবে। সব হত্যার বিচার হবে। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখেন। সব হত্যার বিচার হবে।
তিনি আরও বলেন, সব দাবি পূরণ করা হবে, দেশকে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। সংঘাত ও অরাজকতায় আর কিছু অর্জন সম্ভব হবে না। সে পর্যন্ত সহিংসতা পরিহার করে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সবাই মিলে সব সমস্যার সমাধান করবো। পরিস্থিতি শান্ত হয়ে গেলে কারফিউ, গোলাগুলির প্রয়োজন নেই। বর্তমান সংকট নিরসনে সব দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সেনা সদর দপ্তরে আলোচনা করেছেন বলেও জানান সেনাপ্রধান।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে রোববার ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন ছাড়াও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশসহ মোট ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ের প্রথম থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধে গুলি চালায় পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের হামলায় কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী ও মানুষের মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়লেন শেখ হাসিনা।