27 C
Dhaka
Wednesday, October 23, 2024

‘খাওন দিয়া কি অইব, পানির নিচে সব শেষ’

‘আগে পানি বন্ধ করেন, তারপর খাওন। খাওন দিয়া কি অইব, পানির নিচে সব শেষ। এখনো পানি আসছে।’ ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার প্রশ্নে সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুড়িয়ার বাসিন্দা কাজল আক্তার।

আরেক বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই, একটা পুরুষ লোক নাই, প্রতিবন্ধী মা ও দুই জি (মেয়ে) নিয়ে কোনো রকম জানডা নিয়ে পাড়ে আইছি। কই যামু, যে দিক দিয়া যাই সেদিকেই বিপদ, সহায় সম্বল সব শেষ হয়ে গেছে।’ এমন অনেক আহাজারি কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

আরো পড়ুন  কারও মা-বাবা খারাপ হলে, সন্তানরা দোষী না: এই বার্তা দিতে জীবন দিলাম

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় গোমতি বাঁধের একটি গর্ত দিয়ে নিঃসরণের সময় গর্তটি বড় হয়ে ধসে পরিণত হয়। মুহূর্তেই গোমতির পানি প্রবেশ করে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল, পীরযাত্রাপুর, ভরাসার, বুড়িচং সদর, বাকশিমুল, রাজাপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকালয়ে। রাতে আতঙ্কিত মানুষ দিগ্‌বিদিক ছুটোছুটি শুরু করেন। অনেকেই গোমতি বাঁধের ওপরে আসবাবপত্র ও গবাদি পশু পাখি নিয়ে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

পরে ভোর থেকেই মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে দেখা যায়। আবার কেউ কেউ সম্পত্তি রক্ষায় পানিতে অবস্থান নিয়েছেন। আবার অনেকে পানিবন্দি হয়ে আছে। উদ্ধারের জন্য হাহাকার করছেন তারা। সেনাবাহিনী ও কিছু কিছু জায়গায় সীমিত পরিসরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। এদিকে অনবরত পানি প্রবেশে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা।

আরো পড়ুন  সাতক্ষীরায় ধানবোঝাই ট্রাক উল্টে দুইজন নিহত

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার জানান, গোমতি নদীর বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া অংশে বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করছে। প্রবল বর্ষণের ফলে এ উপজেলার ৬০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এতে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিক এক লাখ টাকার ত্রাণ দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় ঢলে পানি বেড়েছে কুমিল্লার গোমতি নদী ও খালগুলোয়। সর্বশেষ আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

আরো পড়ুন  ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

এদিকে কুমিল্লা সদর, মুরাদনগর ও দেবীদ্বার উপজেলার নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে শত শত বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। অন্যদিকে ভারতের উজানের পানি প্লাবিত হয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় দুলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বিচ্ছিন্ন হয়ে হয়ে পড়ে আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ।

সর্বশেষ সংবাদ