ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী দেশ গঠনে ছাত্রসমাজের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা গণঅধিকার পরিষদ ও অঙ্গসংগঠন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে হাতিয়া উপজেলায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে জুলাই বিপ্লবে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আলোচনা সভায় গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, হাতিয়ার একজন দানব ছিল আওয়ামী লীগের এমপি মুহাম্মদ আলী। তার সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি ছিল হাতিয়ার মানুষ। আজকে সেই সন্ত্রাসীরা এ এলাকায় নাই; জণগণ শান্তিতে বসবাস করছে। হাতিয়ার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আর কোনো দানবের জন্ম যেন হাতিয়ায় না হয়। আজকে আপনারা দেখেছেন ১৫ বছর মানুষের ওপর জুলুমকারী আওয়ামী লীগ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। বর্তমানে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই, তারা এখন অনলাইন লীগে পরিণত হয়েছে। তারা অনলাইনে গুজব ছড়াচ্ছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য। আপনাদের সজাগ থাকতে হবে, আওয়ামী লীগের গুজবে কান দেওয়া যাবে না। এই সরকারের একটা অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে, তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের জামিনে মুক্তি দিচ্ছে। জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগের অনেক নেতাদের, এমনকি শেখ হাসিনার আত্মীয়স্বজন কাউকেই আটক করছে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখেছি এক চাঁদাবাজের পতন হলেও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি, কেবল হাত বদল হয়েছে। গণমাধ্যমে আসছে বিএনপির লোকজন বিভিন্ন জায়গায় দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি করছে, এসব দখলদার ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বিএনপিকে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিএনপি-জামায়াত গত ১৫ বছরে অনেক নির্যাতিত হয়েছে, নিপীড়িত হয়েছে, সুতরাং এমন কোনো কাজ করা যাবে না যাতে বিএনপি-জামায়াতের প্রতি মানুষের মনে ঘৃণা জন্ম হয়। আওয়ামী লীগের দোসর জাতীয় পার্টিকে এই সরকার কোনো কাজে যুক্ত করলে এই জুলাই বিপ্লবে নিহত শহীদদের সাথে বেইমানি করা হবে। এই দালালদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আব্দুজ জাহের বলেন, অপারেশন ক্লিন লীগের মাধ্যমে সারা দেশের আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শত শত নিরপরাধ ছাত্র-জনতা হত্যা করার পরও এখন পর্যন্ত সারা দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নির্বিঘ্নে ঘুরাফেরা করছে, প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তার না করে থানায় বসে বসে কি করছে? আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার না করার পেছনে কোনো উপদেষ্টার হাত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা উচিত।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে আব্দুজ জাহের আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষজন দিশাহারা হয়ে পড়ছে, দেশ সংস্কার করার আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করুন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে জনরোষও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। আপনার মেরুদণ্ড আরেকটু শক্ত করুন। এত কোমল মেরুদণ্ড দিয়ে এ দেশের সংস্কার তো দূরের কথা, ফ্যাসিবাদের উচ্ছেদও সম্ভব না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা তামজিদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদ নোয়াখালী জেলার সদস্য সচিব মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক আযহার উদ্দিন, ছাত্র অধিকার পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব উদ্দিন, সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক সাহারাজ, হাতিয়া উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি নেয়ামত উল্লাহ নিরব, সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সোহাগ, নোয়াখালী জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ উদ্দিন প্রমুখ।