গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, বৈষম্যহীন দেশ গড়তে হলে জনসাধারণের মধ্যে বিরাজ করা ধনবৈষম্য দূর করতে হবে। গত ১৫ বছর লুটপাট ও ফ্যাসিস্ট আচরণ করেছে আওয়ামী লীগ। কেবল এই ১৫ বছরই নয়, দেশে ৫৩ বছর ধরে দুঃশাসন চলছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত গণসংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য এ সংলাপ হয়।
তিনি বলেন, গরিবরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কারণ দেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যিনিই ক্ষমতায় তিনিই সমস্ত ক্ষমতার মালিক বনে যান। দেশে ক্ষমতার এমন ভারসাম্য তৈরি করতে হবে যাতে জনসাধারণের কাছে প্রধানমন্ত্রী জবাবদিহিতা করতে বাধ্য হয়। সেজন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ দিতে হবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, জবাবদিহিতা নিশ্চিতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য লাগবে। সংসদকে দুইকক্ষ বিশিষ্ট হতে হবে। দুই কক্ষের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকতে হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন হতে হবে। নির্বাহী বিভাগ থেকে পুরোপুরি আলাদা করে দিতে হবে। গণমাধ্যমকে স্বাধীন করতে হবে, কোনো সরকার যাতে গণমাধ্যমের ওপর খবরদারি করতে না পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি এ ধরনের ক্ষমতার ভারসাম্য হয়; তাহলে দেশের সব ধর্ম, মতের নাগরিক তাদের অধিকার পাবে।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, দেশের রাস্তায়-ফুটপাতে মানুষ ঘুমায় আর অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের উন্নতির কথা শোনায়। কিন্তু দেশে অট্টালিকা বেড়েছে, অন্যদিকে ফুটপাতে মানুষ বেড়েছে। ১৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশের মানুষ ফসল ফলায়, শিল্পে সম্পদ তৈরি করে অন্যদিকে কতিপয় লোক রাষ্ট্রের সব টাকা পকেটে ঢুকিয়ে বিদেশে পাচার করে। এই পাচার দেশের মাটিতে আর হতে দেওয়া হবে না। ভবিষ্যতে লুটপাট, পাচার বন্ধ হবে তবে যা পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি বলেন, বাজারে আগুন, একশ টাকার নিচে সবজি নেই, দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। অতীতের সিন্ডিকেটের কারণে দাম কমাতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা বলতে চাই, উচ্চমূল্য রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। গ্রাম থেকে পণ্য আসতে যে চাঁদাবাজি হয়, চাতাল ও মিল মালিকরা যে কারসাজি করে ভয়ংকরভাবে দাম বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।
গণসংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল ও কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম আমজাদ হোসেন। দলের বরিশাল জেলার সমন্বয়কারী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেছেন জেলা কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান মিরাজ।