বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ফসল উৎপাদনের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পরীক্ষণ এবং জলবায়ু সহনশীল ফসল ব্যবস্থার অভিযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের চরাঞ্চলে ফসলের উৎপাদন শিলতার উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ক্রপ মডেলিং শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগে অধ্যয়নরত পিএইচডি এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (২০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটায় কৃষিতত্ত্ব বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ওই প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভুঁইয়া।
জানা যায়, প্রশিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. জি. মোস্তফা আমিন এবং অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বাংলাদেশের চরাঞ্চলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষে পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতিতে ক্রপ মডেলিংয়ের প্রয়োগ কৌশল এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের (বিসিসিটি) অর্থায়নে এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে গত তিন দিনব্যাপী ওই প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রকল্পের পরিচালক ড. আহমদ খায়রুল হাসান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবির উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মো. শামসুল আলম। উপস্থিত ছিলেন, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. রমিজ উদ্দিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সালাম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ক্রপ মডেলিং হলো একটি আধুনিক ও গতিশীল মডেল যার কৌশল পরিবর্তিত জলবায়ু পরিস্থিতিতে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এসময় তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ক্রপ মডেলিংয়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং দেশের চরাঞ্চলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল পদ্ধতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
প্রশিক্ষণার্থী ফারিয়া হোসেন বলেন, ক্রপ মডেলিং এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করে বাংলাদেশের কৃষিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাছাড়া ফসলের কাঙ্ক্ষিত ফলন পেতে এবং জলবায়ু ও মাটি পরিস্থিতি যাচাই করে ফসল উৎপাদন এর প্রক্ষেপণ নির্ণয় করা সম্ভব।
আরেক প্রশিক্ষণার্থী তামান্না রহমান বলেন, এই প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যই হলো কৃষকদের সহযোগিতার জন্য নিজেদেরকে আধুনিক এবং দক্ষ হিসেবে প্রস্তুত করা। তোলা।
এসময় প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমদ খায়রুল হাসান বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষিকে বাণিজ্যিক পর্যায়ে নিয়ে যেতেই হবে। আর এ লক্ষ্য অর্জনে আমাদেরকে অবশ্যই আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর সহায়তা নিতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর সাথে পরিচয় করাতে এবং এসব বিষয়গুলোতে দক্ষ করে তুলতে ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। আশা করছি এই প্রশিক্ষণ থেকে অর্জিত জ্ঞান থেকে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের কৃষিকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবে।