জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে ধারণ করে ‘বিপ্লবে বলীয়ান – নির্ভীক জবিয়ান’ প্রতিপাদ্যে নানা আয়োজনে ১৯তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
রোববার (২০ অক্টোবর) দিনব্যাপী এ দিবস উদযাপিত হয়।
এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে হাতে নেওয়া হয় নানা রকমের কর্মসূচি। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের দিন-ই আয়োজন করা হয় ১৯তম ব্যাচের ওরিয়েন্টাল ক্লাস। এ উপলক্ষে সকাল আটটা থেকেই ক্যাম্পাসে নবীন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল, ফাইল, কলম ইত্যাদি দিয়ে বরণ করে নেয় বিভাগগুলো।
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় পতাকা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশনা ও বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। এরপর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার ও ভিক্টোরিয়া পার্ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল, বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো অংশ নেয়।
র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কর্তৃক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা ফলক (পুনঃস্থাপন) উন্মোচন করেন উপাচার্য। এরপর নতুন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী চারুকলা প্রদর্শনী ও চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
দুপুর পৌনে ১২টায় মুক্ত মঞ্চে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম দিবস উপলক্ষে নবীন শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয়ভাবে মুক্তমঞ্চে স্বাগত জানানো ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবশেষে বিকেলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের থিমকে ধারণ করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুভূতি ব্যক্ত করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. পারভেজ হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আমাদের কাছে বড় একটি উৎসব। সবাই একসঙ্গে সানন্দে এ দিবস উদযাপন করেছি। প্রতিবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস এলে অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থী মো. মোস্তাকিম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস হয়েছে। ওরিয়েন্টেশনের দিন এমনিতেই আনন্দ ও ভালো লাগা কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবসের দিন ওরিয়েন্টেশন হওয়ায় আনন্দের মাত্রা আরও বেশি হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রেজাউল করিম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এ কামনা করছি। তাদের জন্যই আজ আমরা স্বৈরাচারমুক্ত স্বাধীন দেশে বিচরণ করতে পারছি।
নবীন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন ও স্বাগত জানিয়ে উপাচার্য দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করার জন্য নিজেদের উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলোর নির্দেশনা দেন। জিএসটি ভর্তি প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি হলেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় সর্বপ্রথম আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হচ্ছে বলে উপাচার্য অভিমত ব্যক্ত করেন।
উপাচার্য আরও বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুবিধ সমস্যা থাকার পরও একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যাবলী গতিশীল করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান কোনো কাজ হয়নি, যার ফলে আমরা অবকাঠামোগতভাবে পিছিয়ে আছি। এসব নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে।