লেবাননে গেল মাস থেকে ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়। এরপর এই প্রথম শনিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। তবে ওই সময় বাসায় ছিলেন না নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী। তাই এ যাত্রায় প্রাণে বেঁচে গেছেন তারা।
প্রতিরোধ যোদ্ধারা ওই হামলা চালালেও সব দায় ইরানের ঘাড়ে চাপাচ্ছে ইসরায়েল। তেলআবিব বলছে, এজন্য ইরানকে চড়া মূল্য দিতে হবে। যদিও সম্ভাব্য এই আততায়ী হামলার সঙ্গে নিজেদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছে ইরান।
নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত বাসভবন লক্ষ্য করে শনিবার তিনটি ড্রোন হামলা চালানো হয়। দুটি ড্রোন ভূপাতিত করা গেলেও তৃতীয় ড্রোনটি আঘাত হানে সিজারিয়া এলাকায়। মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস বলছে, যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম নেতানিয়াহুর সংশ্লিষ্ট কোনো টার্গেট সরাসরি হামলার শিকার হয়েছে।
এদিকে ওই হামলার পর শনিবারই এক ভিডিও বার্তা দেন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ইরানের এজেন্টরা তাকে ও তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছে। এর মাধ্যমে তারা তিক্ত ভুল করেছে বলেও সতর্ক করেন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহুর বক্তব্যের পরপরই তেলআবিবের ঘনিষ্ঠ অজ্ঞাতনামা কূটনৈতিক সূত্র ইসরায়েলি মিডিয়ায় বলেছে, নেতানিয়াহুকে হত্যা প্রচেষ্টার পেছনে তারাও ইরানকে দায়ী বলে মনে করছে এবং এ হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
এর আগে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শনিবার উত্তর ইসরায়েলি শহর সিজারিয়াতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বাড়ির দিকে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। যখন এই হামলাটি চালানো হয় তখন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ওই ভবন কিংবা এর আশপাশেও ছিলেন না।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে, হামলায় যে ভবনটিতে ড্রোন আঘাত হেনেছে সেটি নেতানিয়াহুর বাড়ির অংশ। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলায় কোনো আহতের খবর পাওয়া যায়নি এবং প্রধানমন্ত্রী ওই সময় বাড়িতে ছিলেন কি না তা স্পষ্ট নয়।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, লেবানন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ড্রোনটি। তিনটি ড্রোনের মধ্যে দুটি ড্রোন ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগেই ঠেকিয়ে দেয়া হয়। একটি নেতানিয়াহুর বাসভবনে আঘাত হানে। ভবনটিতে কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা স্পষ্ট হয়নি।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলে বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। আর নেতানিয়াহুর বাড়িতে হামলার ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন আগের হামলার জবাবে ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল।
অবশ্য ইরানে পাল্টা হামলার পক্ষে থাকলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রকাশ্যেই ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার বিরোধিতা করেছেন। একইসঙ্গে ইরানের জ্বালানি অবকাঠামোতে সম্ভাব্য হামলার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
তবে ইসরায়েল ইরানের সামরিক অবকাঠামোগুলোতে আক্রমণ করবে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।