ইসরায়েলের জরুরি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বেনি গানৎস। রোববার (৯ জুন) রাতে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। গানৎসের পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বেনি গানৎস বলেন, মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত কঠিন ও বেদনাদায়ক। নেতানিয়াহু আমাদেরকে প্রকৃত বিজয়ের দিকে অগ্রসর হতে বাধা দিচ্ছেন। এই কারণেই আজ জরুরি সরকার ছেড়ে যাচ্ছি।
এ সময় আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এমন একটি নির্বাচন হওয়া উচিত যা এমন একটি সরকার গঠন করবে, যে সরকার জনগণের আস্থা অর্জন এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে। আমি নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানাই, সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করুন।
তবে গানৎসের বক্তব্যকে ‘অনর্থক’ আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক নেতানিয়াহু বলেছেন, এ ধরনের বক্তব্য ইসরায়েলের জন্য পরাজয়ের শামিল। এর আগে পদত্যাগ না করতে গানৎসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
দৃশ্যত নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিরোধের জেরে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণা করতে ৮ জুন পর্যন্ত নেতানিয়াহুকে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর জরুরি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন নেতানিয়াহু। তিন সদস্যের এই মন্ত্রিসভায় অন্যতম সদস্য ছিলেন বেনি গানৎস। তিনি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এদিকে, গানৎসের পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ। নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী সরকারকে পরিবর্তনের সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গাজায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণায় আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনড় নেতানিয়াহু।
যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে নেতানিয়াহুর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায়। যারা গাজায় হামলা বন্ধের পক্ষে সরব হয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম বেনি গানৎস। বর্তমানে ইসরায়েলি রাজনীতিতে তাকে নেতানিয়াহুর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়।