মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক বছর ধরে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় ওই স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীর মা পারভীন আক্তারের লিখিত অভিযোগে জানা যায়, তার মেয়ে শ্রীমঙ্গল পল হেডিস রোটারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। শ্যামলী আবাসিক এলাকায় একটি সালিশ বৈঠকে পরিচয় হয় পৌর কাউন্সিলর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদের সঙ্গে ওই ছাত্রীর। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে। গত বুধবার (২৬ জুন) তার মেয়ে মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ ধর্ষণের বিস্তারিত তথ্য মাকে জানায়। ঘটনাটি জানার পর তিনি শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ করেন।
ভিকটিম জানায়, তার একটি সালিশ বৈঠকে পৌর কাউন্সিলর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদের সঙ্গে পরিচয় হয়। একসময় মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেম সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে তাকে মাসুদ নিজস্ব রিসোর্টসহ বিভিন্ন রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
ভিকটিম আরও জানায়, গত ১৬ এপ্রিল তাকে আবারও ভানুগাছ রোডের মো. মাসুদুর রহমান নিজস্ব রিসোর্টে নিয়ে ধর্ষণ করেন। ঈদুল আজাহার আগের দিন বিয়ের জন্য চাপ দিতে তার বাসায় গেলে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে টাকা দিয়ে সমাধান করতে বলেন। সে এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মারধর করেন। বর্তমানে অপহরণের জন্য সন্ত্রাসী লাগিয়েছে। তার মাকে বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছে না। সে আত্মগোপন করে অন্যের বাসায় আছে। প্রাণভয়ে চিকিৎসা নিতে পারছে না।
৫নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে ধর্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিল মো. মাসুদুর রহমান মাসুদের বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি। এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সবাই তাকে ভয় পায়।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো আইনি পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
ভিকটিমের মা পারভীন আক্তারের বলেন, কাউন্সিলর একটি ১০নম্বর রিসোর্ট আছে টমটম ড্রাইভার দিয়েছে আমার মেয়েকে নিয়ে যেতে। ওসি স্যারকে আমি একটি অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগটি ওসি নিজে গ্রহণ করেন। অভিযোগ দেওয়ার পরেও আমার আইনগত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। গতকাল সারাদিন আমার বাসায় তার সন্ত্রাসী বাহিনী ঘিরে রাখে। আমি ঘর থেকে বের হতে পারিনি এবং আমার মেয়েকে বিয়ে করবে সেই প্রবণতা দেখিয়ে ধর্ষণ করে আসছে। আমার মেয়ে কাউন্সিলর এর কাছে গিয়েছিল একটি সালিশ নিয়ে এই সুযোগে আমার মেয়েকে ব্যবহার করে।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল ৫ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ সঙ্গে যোগাযোগ করলে ফোন রিসিভ করেননি।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় বলেন, পৌর কাউন্সিলর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ কেউ করেনি। এ ছাড়া মেয়েটি আমি শ্রীমঙ্গল থানায় যোগদানের পূর্বে অন্য একজনের বিরুদ্ধে মেয়েটি অভিযোগ করেছিল। ধর্ষণের কোনো অভিযোগ না পেলে ভিকটিম সম্পর্কে আগাম খবর কেন নিতে গেলেন প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দেননি।