ভারতের উত্তর প্রদেশে এক ধর্মীয় সমাবেশে পদদলিত হয়ে অন্তত ১২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শোকে স্তব্ধ গোটা ভারত। এর মধ্যেই জানা গেল, ওই ঘটনার পর হাসপাতালের মর্গে যখন একের পর এক লাশ আসছিল, তা দেখে হঠাৎই মাথা ঘুরে পড়ে যান কনেস্টবল রবি কুমার। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হলেও, অসুস্থ হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হয় তার।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে হাথরাস জেলার রতি ভানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধর্মীয় ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত এক ধর্মগুরু। তার অনুসারীরাই ওই আয়োজনে গিয়েছিলেন। তবে ঘটনার পর থেকে ভোলে বাবার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় ইতোমধ্যেই দায়ের হয়েছে এফআইআর। কিন্তু জানা গেছে, সেখানে স্বঘোষিত ধর্মগুরু সুরজ পাল ওরফে ভোলে বাবা ওরফে নারায়ণ হরির নাম নেই!
এফআইআরে রয়েছে ভোলে বাবার ‘মুখ্য সর্দার’ অর্থাৎ তার ঘনিষ্ঠ সহকারীর নাম। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, অনুমতি নেয়ার সময় আয়োজকরা ওই ‘সৎসঙ্গ’ বা সভায় উপস্থিত প্রকৃত মানুষের সংখ্যা লুকিয়েছিলেন। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্মীয় ওই আয়োজনে ৮০ হাজার মানুষ জড়ো হবে বলে অনুমতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু জমায়েত ছিল আড়াই লাখের বেশি মানুষের।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, ধর্মগুরুর ‘পায়ের ধুলা’ নেয়ার জন্য এগিয়েছিলেন অনেক ভক্ত। তখনই গুরুর দেহরক্ষীরা তাদের বাধা দেন, এমনকি ঠেলে সরানোর চেষ্টাও করেন। তখনই ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এরপর পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনাতেই লাশ জমতে থাকে হাসপাতালের মর্গে। এর সঙ্গে স্বজনহারাদের কান্নার রোল— সব মিলিয়ে পরিবেশ তীব্র শোকাতুর হয়ে উঠছিল।
ওই মেডিকেল কলেজের মর্গেই মোতায়েন ছিলেন দুই পুলিশকর্মী। তাদের মধ্যে একজন কনস্টেবল রবি কুমার।
তার সহকর্মীরা জানান, মর্গে এত লাশ দেখে অস্বস্তি বোধ করছিলেন রবি। মৃত্যু, রক্ত, আর্তনাদ দেখে বিচলিত হয়ে বারবার পায়চারি করছিলেন। এরপর আচমকাই অসুস্থ বোধ করেন। দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। যদিও ২০ মিনিট পরই মৃত্যু হয় তার।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই পুলিশকর্মীর।