27 C
Dhaka
Tuesday, July 2, 2024

হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধর ছিলেন রানি এলিজাবেথ?

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ৭০ বছর ২১৪ দিন রাজত্ব করেছেন, যা ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ইতিহাসে রেকর্ড। এর আগে এত দীর্ঘ সময় আর কেউই ব্রিটিশ সাম্রাজ্য সামলানোর সময় বা সুযোগ পাননি। তিনি সবচেয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা নারী রাষ্ট্রপ্রধানও। সেই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের পূর্বসূরিদের ইতিহাস ঘাঁটলে ইউরোপের রাজা-রানিদের নামই মনে আসে।

কিন্তু মাঝেমধ্যেই শোনা যায়, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধরদেরই একজন। কতখানি সত্য এই দাবি?

ইতিহাসভিত্তিক ওয়েবসাইট হিস্ট্রি ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর বংশধর, এমন দাবি প্রায় চার দশক পুরোনো। ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম এই দাবি করেন বুর্কেস পিয়ারেজের প্রকাশক জিনিওলজিস্ট হ্যারল্ড বি ব্রুকস বেকার।

আরো পড়ুন  মাদরাসা শিক্ষকদের জন্য সুখবর

তার দাবি, মুহাম্মদ (সা.) এর সঙ্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রক্ত সম্পর্ক রয়েছে। তৎকালীন লৌহমানবী খ্যাত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারকে ব্রুকস বেকার লেখেন, ব্রিটেনের খুব কম লোকই জানে যে রানির দেহে মুহাম্মদ (সা.) এর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে।

১১ শতকে স্পেনের সেভিয়ার একজন মুসলিম রাজকুমারী জেইদার সঙ্গে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর যোগসূত্র বের করে রানি এলিজাবেথের সঙ্গে তাকে কানেক্ট করেন ব্রুকস বেকার।

মুসলিম এই রাজকুমারী পরবর্তী সময়ে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হন এবং কাস্টিলের রাজা ষষ্ঠ আলফোনসোর উপপত্নী হন। তবে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর সঙ্গে জেইদার কোনো যোগসূত্র আদৌ আছে কি না, তা স্পষ্ট জানা যায়নি।

আরো পড়ুন  নবম শ্রেণির বইয়ে অন্তর্বাসের ওয়েবসাইট!

যদিও ইতিহাসবিদ আব্দেলহামিদ আল-আউনির বিশ্বাস, এই দুজনের মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে।

ওই যোগসূত্রের ভিত্তিতেই মরক্কোর সংবাদপত্র আল-ওসবৌসে একটি নিবন্ধ লেখেন ইতিহাসবিদ আল-আউনি। তিনি জেইদাকে ভিত্তি ধরে ৪৩ প্রজন্ম পেছনে মুহাম্মদ (সা.) এর সঙ্গে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের যোগসূত্র স্থাপন করেন।

নিজের দাবির ব্যাপারে আল-আউনি এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে, দ্য ইকোনমিস্টে তিনি বলেন, এই যোগসূত্র দুই ধর্ম ও রাজত্বের মাঝে একটি সেতু তৈরি করেছে।

ব্রুকস বেকার যে দাবি করেছেন, তার সত্যতা নেই। বলা হয়ে থাকে, ব্রুকস বেকার সব সময় আকর্ষক মন্তব্য করতেন। যার অধিকাংশই ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

আরো পড়ুন  বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাহিন কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম

তবে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গে হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর কথিত এই যোগসূত্রকে স্বাগত জানিয়েছিলেন একজন ইসলামিক স্কলার এবং মিশরের ১৮তম গ্র্যান্ড মুফতি আলি গোমা। আল ওসবৌসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলি গোমা এ জন্য এলিজাবেথের জন্য দোয়া ও শান্তি কামনা করেন।

ইসলামের শুরুর দিককার বিষয়াবলি নিয়ে কয়েকটি বই লিখেছেন সাংবাদিক লেসলি হ্যাজেলটন। তার ভাষায়, এটা একটি ক্লিকবেইট। তার ভাষায়, পশ্চিমে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলাম ধর্মকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের প্রতিক্রিয়ায় এমন গুজব ছড়িয়েছে। এমন বিশ্বাস তৈরি হয়েছিল যে, রানি এলিজাবেথের যে সম্মান রয়েছে, পশ্চিমে ইসলাম ধর্মও সেই সম্মান ধারণ করতে পারবে।

সর্বশেষ সংবাদ