ট্রাক চুরি করে এক গ্রুপ; চোরাই ট্রাক বিক্রি করা হয় আরেক গ্রুপের কাছে। এবার সেই ট্রাক দিয়ে এক জেলার পণ্য অন্য জেলায় পৌঁছে দিতে দালালদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। পরে ট্রাকে লোড করা পণ্যসামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। পুলিশ বলছে, এ চোর চক্রের সদস্যরা যোগাযোগ করে ছিনতাই করা মোবাইল দিয়ে। এমন একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে অন্য মামলার চোরাই দামি মালামালও উদ্ধার করা হয়। এ যেন কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়েছে সাপও!
৮ জুন সন্ধ্যা, কেরানীগঞ্জের কালিন্দী এলাকা। মানহা মেটাল সার্ভিস নামক টেউটিন তৈরির কারখানা থেকে প্রায় ১৮ লাখ টাকার টিন বোঝাই করা হয় ট্রাকটিতে। কেরানীগঞ্জ থেকে টিনগুলো পাঠানোর কথা বগুড়ায়। ট্রাকচালককে চালানের কপি বুঝিয়ে দেন ব্যবসায়ী নুর নবী।
চালক যাত্রা শুরু করে। তবে বগুড়া নয়, অন্য কোথাও। পরে ব্যবসায়ী নূর নবী জানতে পারেন টিনগুলো নিয়ে পালিয়ে গেছে চালক।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলার পর পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের অবস্থান শনাক্তের পর ছয় জেলায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের নিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি গোডাউনে চোরাই পণ্য উদ্ধারে অভিযানে যায় পুলিশ। ট্রাক বোঝাই সেই টিনগুলো উদ্ধারও করা হয়।
কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবির বলেন, এ চক্র বিভিন্ন পণ্য দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাকে তোলে। তাদের উদ্দেশ্য থাকে, মালগুলো অল্প দামে কোথাও বিক্রি করে দিয়ে ট্রাক ফেলে তারা পালিয়ে যাবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্রান্সমিশন লাইনের ওয়েল্ডিংয়ের মালামালও চুরি করে চক্রটি। টিনভর্তি চোরাই ট্রাকের খোঁজে নেমে এগুলো উদ্ধার করা হয়। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার আরেকটি মামলার রহস্যও উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। একমাস আগে চুরি হওয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা ৪৩ লাখ টাকার বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীও চুরি করেছে এ চক্রটি। চোরাই করা সেই পণ্যও উদ্ধার করা হয়েছে।
শাহাব উদ্দিন কবির বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ট্রান্সমিশন লাইনের ওয়েল্ডিংয়ের মালামাল অনেক দামি। এগুলো যাওয়ার কথা ছিল পাবনায়; কিন্তু চক্রটি যশোর থেকে মালামাল লোডিং করে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। পরে চুরির এসব মালামাল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, চক্রটি ছিনতাই করা মোবাইল ফোন দিয়ে যোগাযোগ করে, চুরির পর সেই মোবাইল বন্ধ করে দেয়। এদের গ্রেফতার করতে বেগ পেতে হয়েছে।