30 C
Dhaka
Sunday, July 7, 2024

চরাঞ্চলে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক, নেই ধান কাটার লোক

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের চরাঞ্চলে বিষধর রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রবে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ বিষধর সাপের কামড়ে গত দেড় মাসে তিন কৃষকের মৃত্যুর খবরে জমি থেকে ফসল তুলতে ভয় পাচ্ছেন তারা।

শুক্রবার (৩১ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের চর মজলিশপুর, মহিদাপুর, দেবীপুর, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর করনেশনা, আংকের শেখের পাড়াসহ চরাঞ্চলে সাপের উপদ্রবে বাসিন্দারা ভয়ে ফসল কাটতে মাঠে যাচ্ছেন না।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, চর মজলিশপুর এলাকায় এপ্রিল মাসে জমি থেকে ভুট্টা তোলার সময় সাঈদুল শেখ নামের এক কৃষক সাপের কামড়ে মারা যান। তার আগে ২৯ মার্চ চর দেবীপুর মাঠে ময়না বেগম নামের এক কিষানিকে সাপে কামড়ায়। চিকিৎসা নেওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পর নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি।

আরো পড়ুন  ‘আমারে দেখিবার আইসো শেষ জানাজার আগে’

মহিদাপুরের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘২৭ মে দুপুরে মাঠে কাজ করার সময় কৃষক শামীম শেখসহ কয়েকজন পদ্মা নদী থেকে একটি নৌকা টেনে তীরে তুলছিলেন। নৌকার নিচে থাকা রাসেল ভাইপার সাপ শামীমের পায়ে কামড় দেয়। লোকজন সাপটি মেরে তাকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরদিন বিকেলে শামীম মারা যান। এরপর গত বুধবার ধান কাটার সময় কৃষকরা আরেকটি রাসেলস ভাইপার পিটিয়ে মারেন। এখন ভয়ে কেউ জমিতে নামতে ও চরে যেতে সাহস পাচ্ছে না।’

স্থানীয় বাসিন্দারা সাপ আতঙ্কে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শেখ রাসেল মাহমুদ।

আরো পড়ুন  ঐশীর আত্মহত্যা নিয়ে মা-বাবার অভিযোগই সত্য প্রমাণিত

তিনি বলেন, ‘পুরো চরাঞ্চলজুড়ে রাসেলস ভাইপার সাপের কারণে কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ জমিতে যেতে চাচ্ছে না এবং ধান, ভুট্টা কাটতে শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। মাঝেমধ্যে কৃষকরা সাপ দেখে পিটিয়ে মেরে ফেলে মাটিতে পুঁতে ফেলছেন। প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।’

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারসিম তারান্নুম হক বলেন, ‘গত মার্চ মাসে একজন, এপ্রিলে একজন ও মে মাসে দুজন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। মাঝেমধ্যে সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে আসছে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে কেউ মারা যায়নি। তাছাড়া আমাদের হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন রয়েছে। সাপে কাটা রোগী বা পরিবারের কেউ আতঙ্কিত না হয়ে রোগীকে ওঝার কাছে না নিয়ে সরাসরি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। সাপে কাটার পর সময়মতো চিকিৎসা দিতে পারলে রোগী বেঁচে যাবে।’

আরো পড়ুন  এসএসসিতে দুবার অকৃতকার্য, শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

এ দিকে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকনউজ্জামান বিশেষ ধরনের জুতা পরে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাসেলস ভাইপারের মতো বিষধর সাপের উপদ্রব বাড়ায় কৃষকরা চিন্তিত। উপজেলা পরিষদ থেকে প্রথম অবস্থায় চরাঞ্চলের ১০০ জন কৃষককে গামবুট জুতা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে শ্রমিকদের মধ্যেও বিতরণ করা হবে।’

সর্বশেষ সংবাদ