রক্ষণশীলতার খোলস থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসছে সৌদি আরব। তেলের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে আসছে দেশটি। এর বদলে পর্যটন খাতের দিকে নজর বাড়াচ্ছে তারা। এ ছাড়া ধর্মীয় দিক থেকেও উদার মনোভাব প্রদর্শন করছে মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশ। নারীদের গাড়ি চালানো, মাঠে বসে খেলা দেখা ও সিনেমা হল চালুর অনুমতির পর এবার ‘নাইট ক্লাব’ চালু করেছে দেশটি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি মাসেই সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের একটি অভিজাত এলাকায় নাইটক্লাব চালু করা হয়েছে। বিস্ট হাউস নামে এ নাইটক্লাবের নামকরণ করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটিতে একসময় নারীদের জন্য নানা বিধিনিষেধ ছিল। নারীদের চাকরি তো দূরের কথা, স্টেডিয়ামে খেলা দেখা বা সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হওয়াও নিষিদ্ধ ছিল। তবে এসব রক্ষণশীলতা থেকে বের হয়ে আসছে দেশটি। এরই ধারাবাহিকতায় নারীদের গাড়ি চালানোর পাশাপাশি তাদের জন্য খুলল নাইটক্লাবের দরজাও।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিস্ট হাউস নামের এ নাইটক্লাবে নারীদেরও প্রবেশাধিকার রয়েছে। এ ছাড়া এতে রয়েছে মিউজিক ভেন্যু, একাধিক স্টুডিও এবং ডিজে পার্টির ব্যবস্থা। দেশটিতে আইনত মদ নিষিদ্ধ হওয়ায় ক্লাবেও মদ নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। তবে আগত অতিথিদের মকটেল ও বিভিন্ন অ্যালকোহলযুক্ত পানি পানের ব্যবস্থা থাকবে।
নাইটক্লাবে রয়েছেন একদল রক্ষী বা বাউন্সার। এসব বাউন্সার আগত অতিথিদের মধ্যে কেউ অ্যালকোহল নিয়ে এসেছে কি না সেটি লক্ষ্য রাখবেন।
দেশটিতে চালু হওয়া এ নাইটক্লাবে সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার নেই। এজন্য হতে হবে স্থায়ী সদস্য। যার জন্য খবচ করতে হবে প্রতিবছরে এক হাজার ৮০০ ইউরো। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৬৭ টাকা। যা সৌদি ধনকুবেরদের জন্য অবশ্য বিশেষ কিছু নয়।
এর আগে সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রায় চার দশক পর ২০১৮ সালে সৌদি আরবে পুনরায় সিনেমা হল চালু করা হয়েছে। এরপর দেশটিতে দ্রুতগতিতে সিনেমা হল ও প্রদর্শনীর স্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন করে সিনেমা হল খুলে দেওয়ার ৬ বছরপূর্তি উদ্যাপন করেছে দেশটি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সৌদিতে সিনেমা হল রয়েছে ৬৬টি। এসব হলে রয়েছে ৬১৮টি পর্দা। ২২টি শহরজুড়ে থাকা এসব সিনেমা হলে ৬৩ হাজার ৩০০ আসন রয়েছে, যা আরব বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ছয় বছরে সৌদিতে প্রায় ১ হাজার ৯০০ সিনেমা প্রদর্শিত হয়েছে। যার মধ্যে ৪৫টি সৌদির নিজস্ব। এসব সিনেমা প্রদর্শনীর মাধ্যমে আয় হয়েছে ৩ দশমিক ৭ বিলিয়ন রিয়াল। শুধু গত বছর দেশটিতে ১৬ হাজার ৬০০ মিলিয়ন টিকিট বিক্রি হয়েছে।