কিছুদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত প্রিন্স মামুন ও লায়লা। সম্প্রতি লায়লার ধর্ষণ মামলায় ‘টিকটকার’ আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর ওই মামলায় মামুনের রিমান্ড ও জামিন উভয়ই নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি প্রিন্স মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে লায়লার বাসায় গিয়ে বসবাস করতে থাকেন। বিয়ে না হলেও মামুন ও লায়লা থাকতেন একই ঘরে। লায়লার অভিযোগ, তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিকবার তার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক গড়েন মামুন। লায়লা বিয়ের বিষয়ে বললে মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বাসা থেকে চলে যান। এরপর মামুনের মা অভিযোগ করে বলেন তাদের সম্পর্কের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
মামুনের কথিত প্রেমিকা লায়লা এ বিষয়ে একটি বেসরকারি টিভিতে সাক্ষাতকারে মুখ খুলেছেন। মামুনকে ছোট ভাই বলে তাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে লায়লা বলেন, ‘প্রথম যেদিন মামুন আমার সঙ্গে কথা বলে সেদিনই ভিডিও কলে তার মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। উনি শুরু থেকেই আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে জানতেন এবং উনার সম্মতি ছিল। মামুন কোনো দিন সোশ্যাল মিডিয়াতে বলেনি, আমরা ভাইবোন কিংবা বন্ধু। সবসময় বলেছে আমরা ভালোবাসার সম্পর্কে রয়েছি। আমরা সোলমেট।’
মামুনকে স্বেচ্ছায় নিজের ঘরে থাকতে দিয়ে কেন ধর্ষণের মামলা? এ বিষয়ে লায়লা বলেন, ‘আমিতো শুরু থেকে বলছি আমরা একটি ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম। মামুনের পরিবার আমাকে মেনে নিয়েছিল। সবাই আমাকে ওর বউ হিসেবেই মেনে নিয়েছিল। কিন্তু বিয়ের কথা উঠলেই দিনের পর দিন নানা অজুহাতে থামিয়ে দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অনেকবার মামুনের বাড়ি গিয়েছি আমি। ওর মা কিংবা আত্মীয়স্বজন এসে আমার বাড়িতে থেকেছে কিন্তু উনাদেরতো সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে উচিত ছিল আমাদের বিয়ে দিয়ে দেয়ার। কিন্তু তারা তা করেননি। বরং আমাকে ওপরে ওঠার সিড়ির মতো ব্যবহার করেছে। এখন আমার মনে হচ্ছে ওদের মনে অন্য কিছু ছিল। ওরা আর্থিক এবং সামাজিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য আমাকে পুরোটাই ব্যবহার করেছে।’
এর আগে সোমবার (১০ জুন) রাত পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দাউদকান্দি থানা পুলিশ। এরপর তাকে ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ক্যান্টনমেন্ট থানার উপ-পরিদর্শক মো. শাহজাহান। গত ৯ জুন প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় ওই মামলা করেন লায়লা।
অভিযোগে লায়লা উল্লেখ করেন, ‘মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার গত তিন বছর আগে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মতো নিজস্ব কোনো বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে আমার বাসায় থাকার অনুমতি দিই।’
অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। ওইদিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করতো। তবে আমি মামুনকে একাধিকবার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন আবার আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরবর্তী সময়ে আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।